শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

এ বাজেট দেউলিয়া : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘সরকারের দেউলিয়া বাজেট’ বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম পুরো বাজেটে এক-তৃতীয়াংশই হলো ঘাটতি, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। কিন্তু এ বাজেট সম্বন্ধে আমরা যে কথা এরই মধ্যে বলেছিলাম সেটাই সঠিক, অর্থাৎ এটা সরকারের পুরো দেউলিয়া বাজেট। তারা বলেন, সরকারকে আগামী বছর ঋণ নিতে হবে সাকুল্য ৫ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা। যেখানে আগামী বছরের প্রস্তাবিত বাজেট হলো পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার। অর্থাৎ ঋণ হলো বছরের সর্বমোট বাজেট বরাদ্দের চেয়েও বেশি। এরকম মারাত্মক অর্থনীতির পরিস্থিতি বাংলাদেশের প্রায় ৫০ বছরের ইতিহাসে অতীতে কখনো হয়েছে বলে জানা নেই। প্রতিক্রিয়া দেওয়া ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-জোটের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া ও বিকল্প ধারা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী। জোটের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত  বিবৃতিতে নেতরা আরও বলেন, এই করোনা মহামারীতে আমাদের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় আমরা দেখছি বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ। মূলত এদের কথা মনে রেখেই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা উচিত ছিল। এ মুহূর্তে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দারিদ্র্যবিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তার দিকে বেশি নজর দেয়ার দরকার ছিল, যাতে করে বিশেষভাবে যারা করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জীবন ও জীবিকার সমাধান হয়। সরকার বাজেটের জন্য যে প্রণোদনা দিয়েছে সে অর্থেও সোর্স কোথায় জানতে চেয়ে বিবৃতিতে নেতারা বলেন, আমাদের বর্তমান বাজেটের জন্যে এই পরিস্থিতিতে সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে, প্রথমে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি, পরে ৯২ হাজার ৫০০ কোটি এবং সর্বশেষ আমরা শুনতে পাচ্ছি প্রায় এক লাখ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে অতিরিক্ত প্রণোদনা, এই রিসোর্স কোথা থেকে আসবে?

কৃষি খাতে আরও ভর্তুকি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়কে ১৫ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কৃষি খাতে ভর্তুকি ধরা হয়েছে নয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আমরা মনে করি, এই বরাদ্দ এবং ভর্তুকি প্রয়োজনের তুলনায় সম্পূর্ণ অপ্রতুল।

এই বাজেটে বড়লোকদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের কর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বলতে হলে উল্লেখ্য যে, স্বর্ণ আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার মানে, স্বর্ণের দাম কমবে। স্বর্ণ ব্যবহার করেন কারা? সাধারণত ধনিক শ্রেণির। সেখানে ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে বিশেষ করে এই লকডাউনের সময়ে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য যে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট, তার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে কাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এ বাজেট করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর