রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
ওয়ার্ল্ডভিশনের প্রতিবেদন

করোনায় ৯৫ শতাংশ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় ৯৫ শতাংশ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনার প্রভাবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিশু, বিশেষত যারা শহর বা গ্রামের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটি বলছে, এসব সমস্যা মোকাবিলার জন্য দৃঢ় সমন্বয় প্রয়োজন।

গতকাল প্রকাশিত ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশের কভিড-১৯ র‌্যাপিড ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়, দেশব্যাপী সরকার ঘোষিত প্রায় ৯০ দিনে লকডাউনে কার্যত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়ায় দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যার মধ্যে দৈনিক রোজগার বা ব্যবসা বন্ধ থাকায় ৭৮.৩ শতাংশ পরিবারের উপার্জন কমেছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু, যার মধ্যে ৪৬ শতাংশ দারিদ্র্য এবং এর এক-চতুর্থাংশ অতিদারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে উঠছে।

সংস্থাটির অন্তর্বর্তীকালীন ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন গোমেজ বলেন, ‘আমরা শঙ্কিত, বিশেষত পাঁচ বছরের কম বয়সী সেসব শিশুকে নিয়ে যারা অপুষ্টির মতো প্রতিরোধযোগ্য সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে আছে, যা দেশে শিশুমৃত্যুর হার বাড়িয়ে তুলতে পারে। দেশের ২৬টি জেলার ৫৭টি উপজেলার আমাদের কর্মএলাকাগুলোয় আমরা দেখেছি খাদ্য সংকটের কারণে অপুষ্টির মতো সমস্যাগুলোয় শিশুরা অধিক মাত্রায় সংক্রমিত হচ্ছে।’

তাদের প্রতিবেদনটিতে আরও উঠে এসেছে, জরিপ এলাকার ৯৪.৭ শতাংশ পরিবারে খুব সামান্য অথবা কোনো খাবার সঞ্চিত নেই। যেখানে ৩৮.৫ শতাংশ শিশু এবং ৫৮.৯ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে সর্বোচ্চ দুই বেলা খেতে পারছেন। এ ছাড়া ৫৮ শতাংশ পরিবার খুব কম খাবার খেয়ে দিন পার করছে। প্রায় ৩৪ শতাংশ পরিবার রান্না, ধোয়া-মোছা ও পান করার জন্য নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ পরিবার স্বাস্থ্যবিধি উপকরণ ও পরিষ্কার পানির অপর্যাপ্ততার কারণে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারছে না।

চন্দন গোমেজ বলেন, ‘আমি শঙ্কিত সেই ৮৭ শতাংশ শিশুদের নিয়ে যারা বাড়িতে থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে এবং ৯১.৫ শতাংশ শিশু যারা কভিড-১৯ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের শিশু এবং তাদের পাশের জনবসতিসহ বাংলাদেশের সব শিশুর বর্তমান পরিস্থিতিতে যেসব সমস্যা প্রভাবিত করছে তা সমাধানে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং এ সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’

দেশের আট বিভাগের ৫২ উপজেলার ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১ হাজার ৬১৬ শিশু ও ২ হাজার ৬৭১ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর পরিচালিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে র‌্যাপিড ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনটি তৈরি করে ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর