বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

জরিমানা-সুদ ছাড়াই আয়কর রিটার্ন দেওয়া যাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদায়ী ২০১৯- ২০ করবর্ষে যেসব ব্যক্তি শ্রেণি এবং কোম্পানি করদাতা এখনো রিটার্ন দাখিল করতে পারেনি তাদের শর্ত সাপেক্ষে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। মহামারী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে করদাতাদের এ সুবিধা প্রদানের আদেশ জারি করেছে আয়কর বিভাগ।

এনবিআর সদস্য (করনীতি) মো. আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত গত মঙ্গলবারের ওই আদেশে বলা হয়, গত ২৬ মার্চের পর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা, আপিল ও ট্রাইব্যুনালে অ্যাসেসমেন্ট, এডিআরে জরিমানা-সুদ লাগবে না। কিন্তু ২৬ মার্চের আগে মামলার ক্ষেত্রে জরিমানা-সুদ দিতে হবে। সব শ্রেণির করদাতার জন্য যেসব ক্ষেত্রে পরিপালনের সময়সীমা ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত উত্তীর্ণ হয়েছে অথবা আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উত্তীর্ণ হবে সেসব ক্ষেত্রে পরিপালনের বর্ধিত সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হলো।

আদেশে বলা হয়, আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর আওতায় কোনো আয়কর কর্তৃপক্ষ বা কর আপিলাত ট্রাইব্যুনালের যেসব কার্যক্রমের সময়সীমা ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত উত্তীর্ণ হয়েছে অথবা আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উত্তীর্ণ হবে সেসব ক্ষেত্রে বর্ধিত সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হলো। দুই ক্ষেত্রেই রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে বিলম্বজনিত সুদ, জরিমানা প্রযোজ্য হবে না।

আদেশে দেওয়া শর্তের মধ্যে রয়েছে- উৎসে কর কর্তন বা আদায় ও জমার ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। ২০২০-২১ অর্থবছরের অগ্রীম করের প্রথম কিস্তি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উৎসে কর্তিত ও আদায় করা কর নির্ধারিত বিধিবদ্ধ সময়ে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।

এনবিআরের তথ্যমতে, প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর রিটার্ন জমার শেষ দিন। ওই দিন যেসব করদাতা বিভিন্ন কারণে রিটার্ন দাখিল করতে পারেননি, তারা দুই মাস অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন। আবার অনেক করদাতা সার্কেল অফিসারের কাছে, আবেদন করে আরও দুই মাস অর্থাৎ ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করে নিয়েছেন। এর মধ্যে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। ফলে ২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। যা কয়েক দফা বৃদ্ধি করায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন দাখিলে জরিমানা ও সুদ দিতে হবে না।

এদিকে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি মাসে রিটার্ন জমা দেয়। তাতে কর্মীদের প্রতি মাসে কত বেতন দেয় এবং তা থেকে কী পরিমাণ ট্যাক্স কাটে তা উল্লেখ করে। লকডাউনের কারণে অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান সময়মতো রিটার্ন দাখিল করতে পারেনি। এ সুযোগ দেওয়ায় জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারবে।

অন্যদিকে মহামারী, দুর্যোগ, দৈব-দুর্বিপাক বা যুদ্ধের সময় আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধির জন্য আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর সংশোধন করে এনবিআরকে সময় বৃদ্ধির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত ২০ মে আয়কর আইন-১৯৮৪ সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অধ্যাদেশ জারি করেন। এতে বলা হয়, দুর্যোগ, মহামারী, দৈব-দুর্বিপাক বা যুদ্ধের সময়ে এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী সময় বৃদ্ধি করতে পারবে এনবিআর। ৩১ মার্চ ও ১৫ মে এর মধ্যে কিছু আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ছিল। এ ছাড়া আপিল, ট্রাইব্যুনাল, হাই কোর্টের কিছু টাইম লিমিটেশন আছে, যা এনবিআর এ সেকশনের মাধ্যমে সময় বৃদ্ধি করতে পারবে।

সর্বশেষ খবর