শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অধস্তন আদালতের প্রতি হাই কোর্টের চার দফা নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসামিকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন পরবর্তী সময়ে অনুসরণের জন্য অধস্তন আদালতের প্রতি চার দফা নির্দেশনা দিয়েছে উচ্চ আদালত। হাই কোর্টের এসব নির্দেশনা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল এ সংক্রান্ত হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের জনৈক মো. ইব্রাহিমের জামিন বিষয়ে গত ২৩ অক্টোবর বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। চার নির্দেশনায় বলা হয়েছে- এক. হাই কোর্ট থেকে কোনো আসামি যদি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামিনে মুক্তি পান, তবে অধস্তন (বিচারিক) আদালত জামিনের সুস্পষ্ট অপব্যবহার ব্যতীত সেই জামিন বাতিল করতে পারবে না। দুই. নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামিনে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তি যদি অধস্তন আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন, শুধুমাত্র হাই কোর্টের জামিনের এক্সটেনশন অর্ডার না থাকার কারণে অধস্তন আদালত জামিন বাতিল করে জেলহাজতে প্রেরণ করতে পারবে না।

তিন. নির্দিষ্ট সময়ে জামিন পাওয়ার পর যদি সেই সময় পার হয়ে যায় তবে হাই কোর্টে আসামি যেই রুল বা আপিলে জামিন পেয়েছেন সেই রুল বা আপিল নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। চার. অধস্তন আদালত হাই কোর্টের দেওয়া জামিন কোনো অবস্থাতেই (হাই কোর্ট যেই রুলে বা আপিলে জামিন দিয়েছে তা খারিজ না হওয়া পর্যন্ত) বাতিল করতে পারবে না, তবে যদি হাই কোর্ট কোনো শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়, সেই শর্ত ভঙ্গ করলে জামিন বাতিল করা যাবে।

 

মামলার বিবরণে জানা গেছে, জনৈক মো. আবু বকর চৌধুরী তার আট বছরের ছেলেকে বলৎকারের অভিযোগে মো. ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও থানায় ২০১৮ সালের ১৬ মে একটি মামলা করেন। এ মামলায় ওই দিনই পুলিশ ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে। এই মামলায় মো. ইব্রাহিম চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জামিনের আবেদন করেন। ওই আদালত তাকে জামিন না দিলে তিনি হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন। হাই কোর্ট ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর তাকে ছয় মাসের জামিন দেয় ও রুল জারি করে। এরপর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। এ অবস্থায় পুলিশ তদন্ত শেষে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর ইব্রাহিম ২০১৯ সালের ১৯ জুন চট্টগ্রামের ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু ওই আদালত তার আবেদন খারিজ করে তাকে আবারও কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। এরপর তিনি হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন। হাই কোর্ট গত বছর ২৬ জুন তাকে তিন মাসের জামিন দেয় (যা এখনো বহাল রয়েছে)। একই সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারককে তলব করে। ওই বিচারক ১৪ জুলাই হাই কোর্টে হাজির হয়ে ইব্রাহিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের ব্যাখ্যা দেন। পরবর্তীতে ২১ জুলাই লিখিতভাবে হাই কোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।

সর্বশেষ খবর