দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দেশে পঁচাত্তর পরবর্তী ফ্রাঙ্কেনস্টাইন সৃষ্টির জন্য রাজনৈতিক নেতাদের আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো ‘বাংলাদেশে ব্যবসা, রাজনীতি আর দুর্নীতির অনন্য এক দুষ্টচক্র’ শীর্ষক ভিডিও বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের যত গৌরবময় অর্জন তার মূল কৃতিত্ব এ দেশের সাধারণ নাগরিকদের। আমাদের রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এ কৃতিত্বের দাবিদার। তবে একইসঙ্গে আমাদের উন্নয়নের পথে, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথে- যত অন্তরায়, তারও সিংহভাগের দায় আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সংগঠনের। এর কারণ দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় রাজনীতি আর ব্যবসা একাকার হয়ে গেছে। আমরা যখন স্বাধীন হই, তখন প্রথম সংসদে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে যাদের মূল পেশা ব্যবসা, তাদের হার ছিল ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। বর্তমানে সেটি ৬২টি শতাংশ।
৭৫-এর পরিবর্তনের পর সেনাশাসক ও স্বৈরশাসকদের হাত ধরে যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এখন তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। ফলে রাজনীতি আর ব্যবসা একাকার হয়ে গেছে। এটা হলো দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি এবং দুর্বৃত্তায়িত ব্যবসা। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ী সংগঠনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। যেমন ব্যাংকিং খাতে কি বিধিমালা ও সিদ্ধান্ত হবে- তা এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারণ করে না। সেটি নির্ধারণ করে ঋণ খেলাপি, জালিয়াত ও অর্থ পাচারে জড়িতদের একাংশ। তাদের সিদ্ধান্তই হয় সরকারি সিদ্ধান্ত। গণতন্ত্র ও দেশের জন্য এর চেয়ে বড় অশনি সংকেত আর হতে পারে না। তিনি এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।