মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও সময় কাটানোর ভালো মাধ্যম ছাদবাগান

নাটোর প্রতিনিধি

পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও সময় কাটানোর ভালো মাধ্যম ছাদবাগান

ইট কাঠের নাগরিক সভ্যতার শহর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। শৌখিন মানুষরা তাদের ঘরবাড়িতে সবুজকে ধরে রাখতে বাড়ির ছাদে তৈরি করছেন ছাদবাগান। ইদানীং ওটা আর শৌখিনতায় আটকে নেই। নিরাপদ সবজি দিয়ে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদাপূরণ, বিনোদন এবং অবসর কাটানোর এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এ ছাদবাগানগুলো। দেশের শহুরে কৃষি ব্যবস্থার শৌখিন পদযাত্রা সময়ের বিবর্তনে সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিতে যাচ্ছে। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাচকৈড় বাজারের বাসিন্দা সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আবুল কাশেম সরকার তার নিজ বাস ভবনের পাঁচতলা বাড়ির ছাদে করেছেন ছাদবাগান। ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তিনি।

বাড়ির ছাদে উঠলেই চোখে পড়ে বিশাল ছাতা। ছাতার নিচে বসে পরিবারের সদস্যরা চা-কফি আড্ডায় মেতে উঠেছে। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি। ছাদের প্রায় সবটুকু জুড়ে সবুজের সমারহ। আর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নন্দকুজা নদী। নদীতে পানির শব্দ ও ছাদের সবুজে মিলে মিশে একাকার। যান্ত্রিক জীবনে একটু প্রশান্তি পেতে যেন এর চেয়ে সুন্দর মনোরম পরিবেশের আর কোথাও নেই। ছাদ ঘুরে দেখা যায়, আপেল, পেয়ারা, ছবেদা, চেরি, ডালিম, আঙ্গুর, বাতাবি লেবুসহ প্রায় ১৬ রকম ফলের গাছ ও সকল প্রকার সবজি গাছ রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে সুন্দর্যবর্ধনের জন্য বিভিন্ন জাতের ফুল গাছ। ছাদবাগান থেকে প্রতিদিন টাটকা সবজি উঠিয়ে রান্না করতে পারেন এবং প্রতিদিন নাস্তার টেবিলে থাকে নিজেদের লাগানো   গাছের ফল।

ছাদবাগানের উদ্যোক্তা সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আবুল কাশেম সরকার জানান, ছাদবাগান স্থাপন করা হলে শহরের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি পর্যন্ত কমে আসে। আমাদের শহরগুলোতে মাটির অস্তিত্ব দিনদিন কমে আসছে। ইট-কাঠের ভবনের বদলে দ্রুতই বাড়ছে ইস্পাতের কাঠামো ও কাচে মোড়ানো বহুতল ভবন। বিশেষ করে জানালায় কাচ ও বাণিজ্যিক ভবনের টেকসই স্থাপনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে হালকা কিন্তু শক্তিশালী ধাতব পাত, ফাইবার ও গ্লাস। সূর্য থেকে তাপ ও আলো এ ধাতব ও কাচের কাঠামোর একটিতে পড়ে অপরটিতে প্রতিফলিত হয়। এসব কিছু দেখে বাড়ি করার পরপরই আমি ছাদবাগান শুরু করি। ইট-বালু মিশ্রণ দিয়ে ৫০ ফিটের একটি বক্স করে তার মধ্যে সবজি ও ফলের চারা রোপণ করা হয়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতি। এ পদ্ধতির ফলে গাছের শিকড় মাটি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ হয়ে থাকতে পারবে। তারপরও হাফ ড্রাম, মাটির টব, স্টিল প্লাস্টিক ট্রে ও বাড়িতে পরে থাকা তেল, বিস্কুট, মুড়ির খালি জার এবং প্লাস্টিকের খালি বস্তা কাজে লাগিয়ে সেখানে বিভিন্ন জাতের ফল, ফুল ও সবজির চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতিদিন আমার পরিবারের চাহিদার চেয়েও বেশি সবজি ও ফল আমার ছাদবাগান থেকে পাওয়া যায়। তারপরও আমার অবসর সময় এখন ছাদবাগানেই কাটে। গাছের পরিচর্যা করতেই একটি প্রশান্তি কাজ করে।

সর্বশেষ খবর