বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

গৃহকর্মীকে খুন করে শোকার্ত সেজেও রক্ষা পায়নি ওরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

দোয়ারাবাজারে ‘প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে’ লন্ডনিবাড়ির এক গৃহকর্মীকে খুনের পর ‘উপরের নির্দেশে’ শোকার্ত সেজেছিল খুনিরা। কিন্তু পুলিশি তৎপরতায় ওদের শেষ রক্ষা হয়নি। যে ব্যক্তির পরামর্শে শোক প্রকাশের অভিনয় করা হয়, সেই যুক্তরাজ্য প্রবাসীকেও খুনের হুকুমদাতা করা হয়েছে মামলায়। দোয়ারাবাজার উপজেলার গোরেশপুর গ্রামে মঙ্গলবার রাতে খুন হন যুক্তরাজ্য প্রবাসী কামরান আবদুল হাইয়ের বাড়ির গৃহকর্মী আবদুস সালাম (৩৮)। সালাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের নেনগাঁও গ্রামের মুমশ্বর আলীর ছেলে। সালাম ২০ বছর ধরে ওই বাড়িতে গৃহকর্মী।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ৭টার দিকে প্রবাসী কামরানের মামাতো ভাই মছদ আলী গৃহকর্মী সালামকে কাজের কথা বলে ডেকে নিয়ে যান। গভীর রাতেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন প্রতিবেশীরা। ভোরে প্রতিপক্ষ প্রতিবেশীর ধানখেতে লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, প্রবাসী কামরানের মামাতো ভাই জয়নাল আবেদীন, আবদুল ওদুদ, মছদ আলীসহ স্বজনরা মাথায় কালো কাপড় বেঁধে গৃহকর্মীর জন্য শোক দেখাচ্ছিলেন। তাদের অসংলগ্ন আচরণে পুলিশের সন্দেহ হলে তিন ভাইসহ প্রবাসীর পাঁচ আত্মীয় ও একজন গৃহপরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজির আলম বলেন, থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের কথার মিল পাওয়া যায়নি। গ্রামে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ ছিল। মনে হয়েছে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। 

তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে সালামের স্ত্রী লাভলী বেগম বাড়ির মালিক, মামাতো ভাই, মামাতো ভাইয়ের ছেলেসহ ৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।  

উল্লেখ্য, গোরেশপুর (পশ্চিমপাড়া) গ্রামে মসজিদের তহবিল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রবাসী কামরানের মামাতো ভাই এবং ইউপি সদস্য আলী হোসেন গংয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল। কামরান হাইয়ের মামাতো ভাই জয়নাল তার কাছে গচ্ছিত মসজিদের টাকা সুদে লগ্নি করেছেন এমন অভিযোগে ‘একঘরে’ করে রাখা হয় জয়নালসহ তার স্বজনদের। এ নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষও হয়। এ ঘটনায় মামাতো ভাইয়ের পক্ষ নেন কামরান। এ ছাড়া গ্রামের একটি রাস্তা নির্মাণ নিয়েও ইউপি সদস্য আলী হোসেনের সঙ্গে বিরোধ ছিল প্রবাসী কামরান আবদুল হাইয়ের।

সর্বশেষ খবর