সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
চবি ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যার ৪ বছর

তদন্তে নেই অগ্রগতি

বাইজিদ ইমন, চবি

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের এখনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার আসল রহস্য এখনো উন্মোচিত হয়নি। এ নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় কলা অনুষদের নির্মাণকাজের দরপত্র কোন্দলের সূত্র ধরেই পরিকল্পিতভাবে দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। কিন্তু বহুল আলোচিত এ হত্যাকান্ডের চার বছর পূর্ণ হলেও হত্যার আসল রহস্য উন্মোচন করতে পারেননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। প্রতি বছরই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে, হয়নি শুধু মামলার অগ্রগতি। এদিকে সন্তানহারা দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী সুষ্ঠু বিচারের আশায় এখনো ধুঁকে ধুঁকে কাঁদছেন। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বেশ কয়েকবার গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে অনশনেও বসেছেন তিনি।

দিয়াজের বড় বোন জুবাইদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বলেন, কোনো নতুন আসামি গ্রেফতার হয়নি। দুজন আসামি জামিনে আছেন। বাকিরা পলাতক। আমরা সিআইডি অফিসে যাচ্ছি। কিছু দিন আগে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। তাকে নতুন করে সব ডকুমেন্ট ও সাক্ষী দেখাতে হচ্ছে, বোঝাতে হচ্ছে। দিয়াজ হত্যার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার অবদুস সালাম মিয়া বলেন, তদন্ত চলছে। আমি সবেমাত্র এ মামলার তদন্তের দায়িত্বে এসেছি। কিছু দিন আগে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাদীপক্ষ যেসব তথ্য দিয়েছে তা আমরা সংগ্রহ করছি। নিরপেক্ষ জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন উত্তর ক্যাম্পাসে নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজের লাশ। ঘটনার পর দিন প্রথম দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। তিন দিন পর (২৩ নভেম্বর) ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে দিয়াজের পরিবার এ ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে দাবি করে আসছিল। দিয়াজের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর তার মা জাহেদা আমিন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি একে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবি করেন। পরে ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন এক সহকারী প্রক্টর, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সংগঠনটির ১০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। দিয়াজের মায়ের আপত্তির ফলে আদালত সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। এরপর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। তদন্তের স্বার্থে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে একটি টিম দিয়াজের বাসা পরিদর্শন করে। পরে ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দেওয়া দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের শরীরে হত্যার আলামত রয়েছে বলা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিয়াজের মায়ের করা এজাহার হত্যা মামলা হিসেবে নিতে হাটহাজারী থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় আদালত।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর