রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

উত্তরে জেঁকে বসেছে শীত

নজরুল মৃধা, রংপুর

উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র পাওয়া না গেলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। এ সময় শীতজনিত কারণে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়বে সবচেয়ে বেশি। শীতজনিত রোগবালাই বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। তবে শীত মোকাবিলায় প্রতিটি জেলায় গড়ে ৫১ থেকে ৫২ হাজার শীতবস্ত্র বরাদ্দ এসেছে। ওই সব বস্ত্র ইউনিয়নগুলোতে পাঠানো হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে শীতবস্ত্র পাওয়া গেছে মাত্র ৪৭৬ পিস, যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আসি আসি করলেও এ অঞ্চলে শীত হানা দিতে শুরু করেছে দু-তিন দিন ধরে। অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় এবার শীতের তীব্রতা অনেক বেশি হবে এমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়। শুক্রবার সারা দিন সূর্যের মুখ দেখেনি এ অঞ্চলের মানুষ।

জেলা ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি জেলায় শীতবস্ত্রের যে চাহিদা পাঠানো হয়েছিল, এর বিপরীতে বরাদ্দ এসেছে খুব সামান্য। প্রতিটি জেলায় গড়ে চাহিদা ১ লাখ পিছ শীতবস্ত্র। এর বিপরীতে বরাদ্দ এসেছে ৫১ হাজার। এসব শীতবস্ত্র ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের  মাধ্যমে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শীত পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনো পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র নেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে না পারলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি দুস্থ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।

এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, প্রতিটি জেলায় হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের সংখ্যা গড়ে ২ লাখের ওপরে। উত্তরের ১৬ জেলায় কমপক্ষে ৩০ লাখের বেশি হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে। অথচ বরাদ্দ এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও অনেক কম। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে এগিয়ে আসেনি। সচেতন মহলের দাবি, শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এখনই এগিয়ে না এলে করোনাকালে চরম দুর্ভোগে পড়বে শীতার্ত মানুষ। রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, কয়েক দিন ধরে ১৩ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। সেই সঙ্গে কিছুটা হিমেল হাওয়াও বইছে। তিনি জানান, গতকাল দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সেখানে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমবে বলে তিনি জানান। রংপুর ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, সরকারিভাবে ৫১ হাজার কম্বল ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে পাঠানো হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সেগুলো বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হবে। রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ব কুমার রায় জানান, প্রতিবছরই শীত মৌসুম এলে রোগবালাই কিছুটা বাড়ে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অন্যদিকে শীতের জন্য নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষরা ঠিকমতো নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পেরে চরম বেকায়দায় রয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর