বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) হতে পারবেন না মর্মে নির্দেশনা দেওয়া হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারীর আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির। দিনাজপুরের এক নারী নিকাহ রেজিস্ট্রার প্রার্থীর রিট খারিজ করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চের বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর ওই রায় প্রকাশিত হয়। রায় প্রসঙ্গে আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, আদালতের প্রকাশিত রায়টির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, নারীরা মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফেশনে থাকেন। সেক্ষেত্রে মুসলিম বিবাহ হচ্ছে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আমাদের দেশে বেশিরভাগ বিয়ে পড়ানো হয় মসজিদে। ওই সময়ে নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন না এবং তারা নামাজও পড়তে পারেন না।

 সুতরাং বিয়ে যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সেহেতু এই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নারীদের দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। এই পর্যবেক্ষণ দিয়ে হাই কোর্ট এ সংক্রান্ত রিট মামলার ওপর জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) হতে পারবেন না।

এর আগে ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়িয়ার পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনজন মহিলার নাম প্রস্তাব করেন উপদেষ্টা কমিটি। তিন সদস্যের ওই প্যানেলের বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৬ জুন আইন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়’ মর্মে চিঠি দিয়ে তিন সদস্যের প্যানেল বাতিল করে।

পরে আইন মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট দায়ের করেন নিকাহ রেজিস্ট্রারের প্যানেলের এক নম্বর ক্রমিকে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাই কোর্ট। শুনানি শেষে জারি করা রুলটি খারিজ করে রায় ঘোষণা করে হাই কোর্ট।