মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দিনাজপুরে বোরো রোপণের উৎসব

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দিনাজপুরে বোরো রোপণের উৎসব

কুয়াশা আর শীত উপেক্ষা করে ইরি-বোরো চাষে ঝুঁকে পড়েছেন দিনাজপুরের কৃষক-কৃষানিরা। ভোর হতেই ঠান্ডা পানিতে নেমে বোরো ধানের চারা তুলে সেই চারা জমিতে রোপণ করছেন। পাশাপাশি বোরো চাষের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে জমি। আগাম আলু উত্তোলনের পর ওই জমিতে ইরি-বোরো রোপণের হিড়িক পড়েছে। চলছে গ্রামে গ্রামে উৎসবের আমেজ। ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষক-কৃষানিদের। এবার অন্য বছরের তুলনায় দিনাজপুর জেলায় তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। ইরি-বোরো ধানের মধ্যে হাইব্রিড ও উফশী

জাতের ধান বেশি আবাদ হয়। এছাড়াও হিরা-১, হিরা-২, সোনার বাংলা, বি-ধান ২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৮১, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৯সহ স্থানীয় জাতের কিছু ধান চাষ হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় ঢাকা ভোর। বাড়ি সংলগ্ন জমিতে ধানের চারা তুলছেন অনেক কৃষক ও পরিবারের শিশু-কিশোররা। পুরুষরা ঝুড়িতে আবার কেউবা ভার-বাকুয়ায় করে চারা নিয়ে মাঠে যাচ্ছেন। কেউ চাষ দেওয়া জমির ঘাস পরিষ্কার করছেন। পরিষ্কার শেষে সারিতে লাগানো হচ্ছে ধানের চারা। হালকা হিমেল বাতাসে দুলছে সদ্য লাগানো ধানের চারা। দোল খাওয়া ধানের চারায় কৃষক দেখছেন আগামীর রঙিন স্বপ্ন। চারা বড় হবে, ফসলে ভরে উঠবে তার গোলা। কৃষকরা বলছেন, আগাম চারা রোপণ করায় খেতে ফসল ভালো উৎপাদন হয়। আর সারি সারি করে রোপণ করার ফলে পরিচর্যায় স্বস্তি মেলে। এছাড়াও খেতে রোগবালাই কম হওয়ায় অন্যান্য ফসল থেকে শতকরা ২০ ভাগ উৎপাদন বেশি হয়।

চিরিরবন্দরের নশরতপুর ইউপির দক্ষিণ রানীপুর গ্রামের কৃষানি মহচেনা বেগম জানান, এই ফসল দিয়ে পরিবারের খাবারের জোগান দিতে হয়। তাই বোরো মৌসুম এলে সময়মতো রান্না, খাবারের কথা ভুলে যেতে হয়। শুকনো খাবার চিড়া-মুড়ি খেয়ে ভোরে কাজে নামতে হয়। পরিবারের পুরুষরা শ্রমিকদের সাহায্য করতে মাঠে যান। কাহারোলের কাজিটনা গ্রামের কৃষক আরমান জানান, ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার মধ্যে সময়মতো চারা রোপণ করতে না পারলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না।

তাই চারা রোপণ শুরু করেছি।

কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে শীতে বীজতলার তেমন ক্ষতি না হওয়ায় কৃষকেরা বেশ স্বস্তিতে রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, এখন বোরো লাগানোতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষক-কৃষানিরা। কোনো সমস্যা না হলে প্রতি হেক্টরে হাইব্রিড ৪.৮১ মেট্রিকটন এবং উচ্চ ফলনশীল ৪.২৪ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর