রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

কিশোরগঞ্জে প্রথমবারের মতো বারি আলু চাষ

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জে প্রথমবারের মতো বারি আলু চাষ

কিশোরগঞ্জে প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বারি আলু-৪৭। তুলনামূলকভাবে এর ফলন ভালো এবং চাষে খরচও কম। কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় এবার প্রথমবারের মতো তিন একর জমিতে এ জাতের আলু চাষ হয়েছে। এই আলুর গাছ মধ্যম উচ্চতা সম্পন্ন হয় এবং গড়ে ৪-৬টি কান্ড থাকে। কান্ড সবুজ এবং এন্থোসায়ানিন (গাছের কান্ড এবং পাতার শিরায় যে লালচে রঙের আবরণ থাকে) এর বিস্তৃতি কম। পাতা কম ঢেউ খেলানো এবং মধ্য শিরায় এন্থোসায়ানিন খুব কম। আলু খাটো ডিম্বাকৃতি ছোট থেকে মধ্যম আকারের হয়। রং হলুদ ও চামড়া মসৃণ। শাসের রং হালকা হলুদ এবং চোখ মধ্যম অগভীর। হোসেনপুর উপজেলার দীপেশ্বর গ্রামের কৃষক হারুন অর রশিদ ৯০ শতাংশ জমিতে চাষ করে ১৫ মেট্রিক টন এবং একই গ্রামের নজরুল ইসলাম ১২৫ শতাংশ জমিতে চাষ করে ২২ মেট্রিক টন আলু পেয়েছেন। কৃষক হারুন জানান, তিনি মাত্র দুবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করে আশাতীত ফলন পেয়েছেন। অথচ অন্য চাষিরা ১০-১২ বার ওষুধ স্প্রে করে জমিতে লেট ব্লাইট রোগ প্রতিরোধ করতে পারেননি। ফলে তার খরচও কম হয়েছে। কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, অন্য জাত অপেক্ষা এই আলু থেকে বেশি ফলন পাওয়া যায়। ইহা ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট ও লেট ব্লাইট রোগ প্রতিরোধী জাত।

সাধারণ তাপমাত্রায় ৬০-৬৫ দিনে এ আলুর অঙ্কুর বের হয়। এর গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৪৫.১৪ মেট্রিক টন। সাধারণ তাপমাত্রায় বসতবাড়িতে এ আলু ৫-৬ মাস সংরক্ষণ করা যায়। কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি (নভেম্বর) মাসে আলু লাগানোর উপযুক্ত সময়। মাড়াইয়ের সময় ৯০-৯৫ দিন। কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই-এর সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ৪৪-৪৮ কেজি, টিএসপি ২৮-৩০ কেজি, এমওপি ৩৩-৪০ কেজি, জিপসাম ১৪-১৬ কেজি, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ১৯-২১ কেজি, বোরন সার ১ কেজি ও গোবর ১৩০০ কেজি। সার প্রয়োগের পর সঙ্গে সঙ্গে সার ও বীজ মাটি দিয়ে ভেলি তুলে ঢেকে দিতে হবে। বীজ রোপণের পর জমিতে ভালো রস না থাকলে সেচ দেওয়া উত্তম, তবে খেয়াল রাখতে হবে খেতে কোনোভাবেই পানি আটকে না থাকে। জমি থেকে আলু উঠানোর ৭-১০ দিন পূর্বে মাটি ভেদে সেচ প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। উল্লেখ্য, দাদ রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আলু রোপণের পর ৩০-৫৫ দিনের সময়ে জমিতে কোনো অবস্থায় রসের ঘাটতি এবং ৬০-৬৫ দিনের পর রসের আধিক্য হতে দেওয়া যাবে না।

সর্বশেষ খবর