সোমবার, ১৫ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
হাটহাজারীর মাদরাসা

নির্যাতনের শিকার শিশুর লেখাপড়ায় খেয়াল রাখতে বলেছে হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদরাসায় বেধড়ক মারধরের শিকার শিশুটির লেখাপড়া বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেছে হাই কোর্ট। আদালত বলেছে, মাদরাসায় নির্যাতন, বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, এমনকি যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে আদালতের নির্দেশনা আছে। নির্দেশনাগুলো সব জায়গায় যাতে কার্যকর হয়। কমিটি গঠনসহ আদালতের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়নে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ যাতে সচেষ্ট থাকে। গতকাল হাটহাজারীর ওই মাদরাসার শিক্ষক মো. ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ বিষয়ক শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করে। গৃহীত পদক্ষেপ আদালতে তুলে ধরে রাষ্ট্রপক্ষ।

ওই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ১১ মার্চ আদালতে তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। সেদিন শুনানি নিয়ে হাই কোর্টের একই বেঞ্চ ওই ঘটনায় নেওয়া পদক্ষেপ রবিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে মৌখিক আদেশ দেয়। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ-সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার পদক্ষেপ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

 

শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালতের মৌখিক নির্দেশনা অনুসারে দেওয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, দন্ডবিধি ও শিশু আইনে এ ঘটনায় ১০ মার্চ মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে মাদরাসাশিক্ষক মাওলানা মো. ইয়াহিয়াকে নিম্ন আদালতে হাজির করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্যাতিত শিশুশিক্ষার্থীকে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শিশুটির বাসায় তিনজন পুলিশ মোতায়েন করে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রথমে শিশুটির মা-বাবা মামলা করতে চাননি বলে পর্যবেক্ষণ এসেছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার (কাউন্সেলিং) পর শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মাদরাসার প্রিন্সিপালসহ দায়িত্বশীল যারা আছেন, তাদের সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, যাতে এই মাদরাসা বা অন্য কোনো মাদরাসায় এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বিচ্ছিন্ন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

জানা গেছে, হেফজ বিভাগের শিশুটির জন্মদিন উপলক্ষে তাকে দেখতে ৯ মার্চ বিকালে মা-বাবা মাদরাসায় আসেন। তারা চলে যাওয়ার পরপরই শিশুটি মাদরাসা থেকে বাইরে বের হয়। তখন শিশুটিকে ধরে মাদরাসার ভিতরে নিয়ে মারধর করেন শিক্ষক ইয়াহিয়া। ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক ইয়াহিয়া শিশুটিকে ঘাড় ধরে মাদরাসার ভিতরে নিয়ে যান। পরে তিনি শিশুটিকে বেধড়ক মারধর করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর