শিরোনাম
রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

মাদারীপুরে মেয়েকে ধর্ষণের জন্য মা-বাবাকে হত্যা

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

কৃষিকাজের জন্য আশরাফুল মোল্লা নামে এক শ্রমিক ভাড়া করে আনেন কৃষক মোয়াজ্জেম সরদার। সেই শ্রমিকের কুদৃষ্টি পড়ে মোয়াজ্জেম সরদারের কিশোরী মেয়ের ওপর। এরপর খুনের পরিকল্পনা করে আশরাফুল। একে একে খুন করে ওই কিশোরীর মা-বাবা দুজনকে। পরে মরদেহ গুম করার জন্য হাত-পা বেঁধে ফেলে দেয় একটি খালের মধ্যে। এরপর রাতভর ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ভোরে পালিয়ে যায় আশরাফুল। এমনই রোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুরের কালকিনিতে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে আশরাফুল মোল্লা। পিবিআইর পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, সম্প্রতি কৃষিকাজ করতে অপরিচিত কয়েকজন যুবক কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কোলচুরি সস্তাল গ্রামে আসে। পরে ওই এলাকার কৃষক মোয়াজ্জেমের মেয়ের ওপর কুনজর পড়ে আশরাফুলের।
এতে বাধা দেন কৃষক দম্পতি। পরে তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে আশরাফুল। ৪ এপ্রিল প্রথম ওই কৃষককে ডেকে নিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। পরে তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে একইভাবে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে আশরাফুল। পিবিআইর পুলিশ সুপার আরও জানান, আলোচিত স্বামী-স্ত্রী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার একমাত্র আসামি আশরাফুল মোল্লা (৩৯) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেনের আদালতে জবানবন্দি দেয় আশরাফুল। পরে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে নড়াইল সদর উপজেলার শৈলপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন গোপালগঞ্জ জেলার একটি টিম। গ্রেফতার আশরাফুল নড়াইল সদর উপজেলার মধ্যপল্লী এলাকার আকবর মোল্লার ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের লোকজন কৃষক দম্পতি নিখোঁজ দাবি করে কালকিনি থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। নিখোঁজের চার দিন পর ৯ এপ্রিল রাজারচরের শুকিয়ে যাওয়া একটি খালের মধ্য থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মামলাটির দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার ১৩ দিন পর নড়াইল থেকে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আশরাফুলকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এ সময় নিহত স্বামী-স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়। পিবিআইর পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পোশাক ব্যবহার করে এবং সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দাবি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক অপরাধ করেছে আশরাফুল। তার বিরুদ্ধে যশোর, নড়াইল ও রাজশাহীতে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে। কৃষক দম্পতি হত্যার পরিকল্পনা শুধু তাদের মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য করা হয়। স্বামী-স্ত্রী হত্যার পর রাতে তাদের মেয়ের সঙ্গে জোরপূর্বক একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে আশরাফুল। পরে ভোরে পালিয়ে যায় সে। হত্যার ঘটনায় শুধু আশরাফুল একাই জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আশরাফুল আদালতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে, তাই আদালত নির্দেশ দিলে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হতে পারে। ধর্ষণ মামলা না হলে আমরা ধর্ষণের বিষয়টি উল্লেখ করে আলাদা চার্জশিট দেব।’

সর্বশেষ খবর