শনিবার, ৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

চা বাগানে পাল্টে গেছে পঞ্চগড়ের অর্থনীতি

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

চা বাগানে পাল্টে গেছে পঞ্চগড়ের অর্থনীতি। পতিত সমতল ভূমিতে চা চাষে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। জেগে উঠেছে অপার সম্ভাবনা। নতুন আশায় নতুন স্বপ্নে এগিয়ে যাচ্ছে প্রান্তিক এলাকার মানুষ। ২০২০ সালে পঞ্চগড়সহ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় সমতলের ১০টি চা-বাগান ও ৭ সহস্রাধিক ক্ষুদ্রায়তন চা-চাষির চা-বাগান থেকে ১ কোটি ৩ লাখ বা ১০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এ বছর জাতীয় উৎপাদনের ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজির মধ্যে উত্তরাঞ্চলের সমতলের চা-বাগান থেকে যুক্ত হয়েছে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ। ২০০০ সালে ক্ষুদ্র আকারে চা চাষ শুরু হয় পঞ্চগড়ে।
১৯৯৬ সাল। রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসেন পঞ্চগড়ে। তখন সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে চারদিকে অনাবাদি জমি। পতিত সমতল ভূমিতে উৎপাদন হয় একটি মাত্র ফসল। ঘরে ঘরে অভাব-অনটন। কুসংস্কারে আচ্ছন্ন পুরো অঞ্চল। প্রতিবছর মঙ্গা যেন নিয়তি। দরিদ্র পুষ্টিহীন মানুষের মিছিল। বিচলিত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট যাওয়ার রাস্তা খারাপ হওয়ায় হেঁটে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসকসহ দলীয় নেতারা। সীমান্তের খুব কাছেই তিনি দেখতে পান ভারতীয় বিশাল বিশাল চা বাগান। জেলা প্রশাসককে প্রশ্ন করেনÑ ‘পঞ্চগড় এবং ভারতের মাটি একই রকম। ভারতীয় মাটিতে চা হলে বাংলাদেশে হয় না কেন? তিনি একটি চা গাছ সংগ্রহ করে পঞ্চগড়ে লাগাতে বলেন। তৎকালীন জেলা প্রশাসক চায়ের চারা সংগ্রহ করে সার্কিট হাউসে লাগিয়ে দেখলেন পঞ্চগড়ে চা চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। বাংলাদেশ টি বোর্ডের নর্দান বাংলাদেশ চা প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডায়নামিক দৃষ্টি এবং একটি মাত্র প্রশ্নের কারণেই বদলে গেছে এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।
এই জেলার সমতলের চা বাগান ঘিরে টি ট্যুরিজমের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ চা মেলা হয়। উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তৃৃতায় পঞ্চগড়ে চা চাষে বিপ্লবের গল্পটি শোনান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর