রাজশাহী মহানগরীর সংস্কৃতিকর্মী আহসান কবীর লিটন ও নগর আওয়ামী লীগ নেতা ডাবলু সরকার। দুজনই টিকার দুটি ডোজ নিয়েছিলেন। টিকা নেওয়ার কিছুদিন পর দুজনই করোনা আক্রান্ত হন। ফেসবুক পোস্টে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, টিকার দুই ডোজ গ্রহণের পর এ মাসের শুরুতে তার পিতা-মাতা করোনায় আক্রান্ত হন। যদিও ২১ জুন তারা করোনা নেগেটিভ হয়েছেন। গণমাধ্যমকর্মী আবদুস সাত্তার ডলার দুই ডোজ নেওয়ার পরও করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এ ছাড়া টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। এদের মধ্যে শুধু এমপি ফজলে হোসেন বাদশা ছাড়া কাউকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। এমনকি তাদের শারীরিক অবস্থারও তেমন অসুবিধা দেখা দেয়নি। তারা মনে করেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণে করোনা সংক্রমিত হওয়ার পরও মারাত্মক অবস্থার মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হয়নি। আহসান কবীর লিটন বলেন, তার লিভারের সমস্যা আছে। করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও তার অবস্থা খারাপ হয়নি। তিনি মনে করেন, টিকা নেওয়ার কারণে তাকে মারাত্মক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের পিতা মো. শামসুদ্দিন জানান, পজিটিভ হলেও শারীরিক কোনো জটিলতা দেখা দেয়নি। এখন তিনি নেগেটিভ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিতদের সংক্রমণ এখন নেই বললেই চলে। করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছেন ২৫২ জন চিকিৎসক, ৫৮০ জন নার্স ও ১৫২ জন স্বাস্থ্যকর্মী। ১২৩ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২০ জনই প্রথম ঢেউয়ের সময়। প্রথম ঢেউয়ের সময় ২৬৭ জন নার্স সংক্রমিত হলেও এবার ৫৭ জন। কর্তৃপক্ষ বলছে, চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কতটা ঝুঁকিমুক্ত হয়েছেন, তা দুই ধাপের তুলনা করলেই স্পষ্ট। অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা পেয়েছেন। এটি নিশ্চিত করার কারণে এখন করোনা ওয়ার্ডে কাজ করলেও সংক্রমিত হচ্ছে কম। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার কার্যকারিতা নিয়ে দেশে সেভাবে গবেষণার ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে রোগীদের ইতিহাস ও আশপাশের তথ্য বলছে, টিকার কার্যকারিতা প্রত্যাশার তুলনায় ভালো। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. ওবাইদুল্লাহ ইবনে আলী বলেন, ‘টিকা একটি উপায়, কিন্তু একমাত্র উপায় নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেসজ্ঞ ডা. অধ্যাপক চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, ‘যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এমন তথ্য নেই। তবে সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার জানান, রাজশাহীতে ৪৫ হাজারের কিছু বেশি মানুষ বাকি আছেন, যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন। তারা চেষ্টা করছেন টিকা সংগ্রহের। সংক্রমণ ও মৃত্যুহার যেভাবে বাড়ছে, তাতে সবাই টিকার আওতায় না আসা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
