সোমবার, ২৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত স্বামী খালাস পেলেন হাই কোর্টে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরিশালে কোহিনুর বেগম নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে স্বামী মোস্তফা সরদারকে খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট। এর আগে বিচারিক আদালত মোস্তফাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল। গতকাল বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ নোয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুনুর রশিদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী বশির আহমেদ, জাহিদ আহাম্মদ ও মোহাম্মদ শফিকুজ্জামান। আইনজীবী শিশির মনির জানান, সব বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ এবং চিকিৎসা সনদপত্র অনুসারে কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। তাই তার স্বামী মোস্তফা সরদার খালাস পেয়েছেন।

স্ত্রী হত্যার দায়ে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়েরা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আদীব আলী আসামি মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদন্ড দেন। দন্ডপ্রাপ্ত মোস্তফা সরদার বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার বাসিন্দা। আইন অনুযায়ী এ মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে পাঠানো হয়। পরে আসামিও আপিল করেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার বাসিন্দা আসমত আলী সরদারের মেয়ে কোহিনুর বেগমের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা হাতেম আলী সরদারের ছেলে মোস্তফা সরদারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কোহিনুরের মৃত্যুর দুই মাস আগে মোস্তফা সরদার একই এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বুলু বেগমকে বিয়ে করেন।

এ নিয়ে মোস্তফা সরদার ও কোহিনুরের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। এ বিয়ের পর থেকে কোহিনুরকে প্রায়ই মারধর করতেন মোস্তফা। ২০১০ সালে কোহিনুরের প্রতিবেশী সরোয়ার পাইকের স্ত্রী হাসি বেগমের মাধ্যমে তার (কোহিনুর) বাবা আসমত আলী সরদার জানতে পারেন তার মেয়েকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ঘটনায় তিনি ও স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে কোথাও পাননি। পরে একই সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মোস্তফা সরদারের চৌচালা ঘরের মাচার আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় কোহিনুরের মরদেহ উদ্ধার করেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে তিনি ওই দিনই পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সাতজনের সাক্ষ্য নেওয়া শেষে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মোস্তফার দ্বিতীয় স্ত্রী বুলু বেগম ও তার আগের স্বামী লাল মিয়াকে খালাস দেয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২০১ ধারায় সাত বছরের কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদন্ডাদেশ দেয় আদালত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর