ঢাকার আশুলিয়ায় নিজ ঘরে ডিশ ব্যবসায়ী ইলিম সরকারকে (৪২) কুপিয়ে হত্যার সময় পাহারায় ছিলেন তারই স্ত্রী। ওই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরকীয়ার জেরে স্ত্রীর যোগসাজশে ওই ব্যবসায়ী খুন হন বলে পিবিআইর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় পিবিআইর ঢাকা জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৮ মার্চ সিনেমা স্টাইলে স্বামী ইলিম সরকারকে হত্যা করেন স্ত্রী ও তার প্রেমিক পিন্টু। পরে পুলিশ ও পরিবারের সদস্যকে বিভ্রান্ত করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইলিমের স্ত্রী। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনও করেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম জানান, নিহত ইলিম সরকার আশুলিয়ার কাঠগড়া সরকারবাড়ি এলাকার হাজী ফজল সরকারের ছোট ছেলে। তিনি প্রায় ৫ বছর ধরে ডিসের ব্যবসা করছিলেন। তার ১০ বছর বয়সের ছেলে কাইফ ও ৭ বছরের কাশফিয়া নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় নাটোরের গুরুদাসপুরের তেলটুপি গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে মোহাম্মদ রবিউল করিম পিন্টুকেও (৩৫)।
তিনি জামগড়া পল্লিবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের লাইনম্যান ছিলেন ও জামগড়ার বেরন এলাকায় থাকতেন। এ ঘটনায় আরও একজন পলাতক রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, নিহতের স্ত্রী তার নানাবাড়ি কাঠগড়া থেকে লেখাপড়া করার সুবাদে ইলিম সরকারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ১৪ বছর আগে বিয়ে করে তারা দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। ইলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুতের মিটার লাগানোর কাজ করতে এসে নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে ২০১৯ সালে পরিচয় হয় পিন্টুর। এরপর তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি ইলিম সরকার জানতে পারলে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। পরে পরকীয়া সম্পর্কের পথের কাঁটা তার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে স্বামী ইলিম সরকারকে দই মিষ্টির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দেয় তার স্ত্রী। ২৮ মার্চ সকালে ঘুমের মধ্যেই ইলিম সরকারের কুপিয়ে হত্যা করেন পাহারারত স্ত্রী ও তার প্রেমিকসহ সহযোগীরা। এর আগে দুজন ভাড়াটে খুনিকে ভুক্তভোগীর বাসায় ভাড়া থাকার ব্যবস্থা করে দেয় পিন্টু। তবে ভাড়াটে খুনিরা ব্যর্থ হয়। হত্যাকান্ডের ৭ দিন আগে ইলিম সরকারকে খুনের পরিকল্পনা করেন তার স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক পিন্টু। হত্যাকান্ড ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য ডিশ ব্যবসার কোন্দলের বিষয়টি তখন প্রচার করেন স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি।
