রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজধানীতে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরা থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪ এর সদস্যরা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন লিটন মিয়া ওরফে ডা. লিটন (৪৪) এবং আজাদ রহমান খান (৬৫)। তাদের কাছ থেকে প্রাইভেটকার, পাসপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ল্যাপটপ, ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। র‌্যাব বলছে, চক্রটি ২০০-২৫০ জনকে পাচার করেছে, তাদের মধ্যে ৩৫-৪০ জন নারী। লিটনের বাড়ি গাইবান্ধায়, আজাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। র‌্যাব-৪ সূত্রে জানা গেছে, লিটন ও আজাদ মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মানবপাচারকারী চক্রের কর্ণধার। চক্রটির দেশে-বিদেশে ১৫-২০ জন সক্রিয় সদস্য আছে। এই চক্র বিভিন্ন প্রতারণামূলক ফাঁদে ফেলে উচ্চ বেতনের কথা বলে ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মানবপাচার করেন। তারা মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচারে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন। লিটন ও আজাদের নামে বিভিন্ন থানায় মানবপাচার ও প্রতারণাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

র?্যাব জানায়, বিভিন্ন পেশায় দক্ষ নারী যেমন নার্স, পার্লার ও বিক্রয় কর্মীদের টার্গেট করে এই চক্রটি। চক্রটি মূলত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক, মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারসহ বিভিন্ন চাকরির কথা বলে প্রতারণা করেন। প্রতারণার কৌশল হিসেবে চক্রের মূলহোতা লিটন নিজেকে ঢাকা মেডিকেল থেকে পাস করা এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিতেন। আরও জানাতেন ইরাকের বাগদাদে একটি স্বনামধন্য হাসপাতালে কর্মরত।

সহযোগী আজাদ একটি এজেন্সির আড়ালে নারী পাচারের সঙ্গে যুক্ত। এই চক্রটি বিদেশে পাচারের পর ভিকটিমদের অনৈতিক কাজের জন্য বিক্রি করে দিতেন। ভিকটিমদের প্রথমে বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে নেওয়া হতো। ১/২ দিন অপেক্ষা করিয়ে ভিজিট ট্যুরিস্ট ভিসায় ইরাকসহ অন্যান্য দেশে পাচার করতেন। ইরাকে লিটনের কয়েকটি সেফ হাউসে ভিকটিমদের রাখতেন। পরে সুবিধাজনক সময়ে ভিকটিমদের বিক্রি করে দিতেন। ভিকটিমদের কাছ থেকে ৩/৪ লাখ টাকা নেওয়া হতো। আবার তাদের প্রায় বাংলাদেশি সমমূল্যের তিন লাখ টাকায় বিক্রি করা হতো।

লিটন সরকারি একটি সংস্থায় মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি করতেন। ২০১০ সালে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় চাকরিচ্যুত হন। তারপর ২০১৩ সালে ইরাকে গিয়ে সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলেন। ইরাকে অবস্থানকালীন ২০১৬ সালে তিনি আজাদ সম্পর্কে জানতে পারেন ও পরবর্তীতে তার সঙ্গে সখ্য তৈরি হয়। বাংলাদেশ থেকে নারীদের মধ্যপ্রাচ্যে পাচারের কাজে আজাদ সহায়তা করতেন। অনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত থাকায় ইরাকে গ্রেফতার এড়াতে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। আজাদ আগে দুই বার ইরাকে গ্রেফতার হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি বালুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

সর্বশেষ খবর