রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার সরকারি খাল দখল করে মেয়র আব্বাস আলীর নির্মাণাধীন দুটি মার্কেট গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল সকাল ৯টায় বুলডোজার দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। ভবন দুটি ভাঙায় নেতৃত্ব দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন। তিনি বলেন, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভবন দুটি উচ্ছেদে তারা চিঠি পান। ৩০ দিন আগে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর আইন অনুযায়ী আজ (গতকাল) ভবন দুটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। বছরখানেক আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাটাখালী পৌরসভার ওপর দিয়ে যাওয়া খালটি ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পুনঃখনন করে। গত এপ্রিলের দিকে কাটাখালীর মেয়র সরকারি এই খালের ওপর ভবন নির্মাণ শুরু করেন। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে সরকারি ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে খালের ওপর প্রায় ১ হাজার ১৪৪ বর্গফুট জায়গাজুড়ে একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ শুরু হয়। এখানে ইতিমধ্যে দুইতলা ভবন উঠে গেছে। এই ভবনে দোকান হওয়ার কথা ছিল ২১টি। ব্রিজের উত্তরপাশে খালের ওপর আরেকটি ভবনের দুইতলা উঠে গেছে। এই ভবনে দোকান হওয়ার কথা ছিল ছয়টি। সরকারি খালের ওপর ভবন নির্মাণের অভিযোগ করেন পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত আগস্ট মাসে পবা উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। এরপর কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকলেও পরে আবার জোরেশোরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
গত ১০ অক্টোবর এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপের জন্য চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। চিঠি দেওয়ার প্রায় দুই মাস পর ভবনটি ভাঙল প্রশাসন। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। গত ৩০ নভেম্বর ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে র?্যাব তাকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। সোমবার পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানি হতে পারে। এর আগে কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়াও মেয়র আব্বাস আলীর ওপর অনাস্থা জানিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন পৌরসভার ১২ কাউন্সিলর।
