মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
ইউএনও ও পুলিশের মামলা

বরিশালের মেয়রকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে সিটি করপোরেশন ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। ইউএনওর দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. লোকমান হোসেন সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহসহ ২৮ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৬ ডিসেম্বর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। অপর মামলায় মেয়রসহ ৯৪ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৭ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ হোসেন। তবে পুলিশের দেওয়া দুটি প্রতিবেদন আদালত এখনো গ্রহণ করেনি। ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে ওই দুই মামলার ধার্য তারিখ থাকায় ওই সময় শুনানি শেষে প্রতিবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যানার ও পোস্টার অপসারণকে কেন্দ্র করে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সঙ্গে ইউএনওর বাসভবনে দায়িত্বরত আনসারদের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে সেখানে ইউএনও এবং করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা কিছু সময়ের মধ্যে সেখানে জড়ো হলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে আনসার সদস্যরা। এতে আওয়ামী লীগ এবং সিটি করপোরশেনের ৬০ জন কর্মী আহত হন। ওই ঘটনায় কয়েকজন আনসার সদস্য এবং পুলিশও আহত হয়।  ঘটনার পরদিন ১৯ আগস্ট সদর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে তার সরকারি বাসভবন ও দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান সহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। একই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক শাহজালাল বাদী হয়ে মেয়রসহ ৯৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ইউএনওর মামলা শুরুতে তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন। তিনি বদলি হয়ে যাওয়ায় গত ১৯ নভেম্বর থেকে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন মামলার দায়িত্ব পান। ৬ ডিসেম্বর মেয়রসহ ২৮ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন তিনি। যথেষ্ট স্বাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন।

এদিকে ওই ঘটনায় মেয়রসহ ৯৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে উপ-পরিদর্শক শাহজালালের দায়ের করা মামলায়ও ৭ ডিসেম্বর একই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। যথাযথ সাক্ষী না থাকায় তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) খন্দকার ফরিদ হোসেন মেয়রসহ ৯৪ আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন বলে জানান কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. লোকমান হোসেন।

অপরদিকে প্রশাসনের মামলার পাল্টা হিসেবে প্যানেল মেয়র এবং সিটি করপোরেশনের এক হিসাবরক্ষক বাদী হয়ে ইউএনও এবং ওসিসহ প্রায় অর্ধশত জনকে আসামি করে আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেন। ওই মামলা তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সম্প্রতি ইউএনও এবং ওসি অন্যত্র বদলি হয়ে যান।

সর্বশেষ খবর