শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ বললেন

চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডকে ‘লিটল বাংলাদেশ’ বানাতে চাই

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের কন্যা শাহানা হানিফ জয়ী হওয়ার পর সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নিউইয়র্কের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডকে আমি ‘লিটল বাংলাদেশ’ হিসেবে পরিচিত করতে চাই। সেভাবেই সবকিছু করব। এ জন্য প্রবাসীদের সর্বাত্মক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক সিটিতে ২ লাখের অধিক বাংলাদেশি বাস করেন। ব্রঙ্কসে একটি রাস্তার নাম ‘বাংলাবাজার ওয়ে’ ব্যতীত আর কোনো চিহ্ন নেই এ সিটিতে। এর চেয়ে অনেক কম বাংলাদেশির বসতি রয়েছে শিকাগোতে। সেখানেও দুই দশক আগে ‘শেখ মুজিব ওয়ে’ স্থাপিত হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘লিটল বাংলাদেশ’, মিশিগানে ‘বাংলাদেশ এভিনিউ’, নিউজার্সির প্যাটারসনে ‘জালালাবাদ স্ট্রিট’ হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এবং কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসে একটি সড়ক অথবা ক্রস স্ট্রিটের নামকরণ ‘বঙ্গবন্ধু স্কোয়ার’ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু পরবর্তীতে তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের পাল্টা উদ্যোগে ভেস্তে গেছে।

 ১৯৯৬ সালে ব্রুকলিনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরনবী এবং আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফসহ অনেকের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু মেলা’ বসেছিল। সে সময়ের উদ্যোক্তারা ‘বঙ্গবন্ধু স্কোয়ার’ করার সংকল্প ব্যক্ত করেছিলেন। এরপর পানি গড়িয়েছে অনেক। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে সিটি অথবা স্টেট প্রশাসনে জোরালো সম্পর্ক না থাকার জন্য কাজ হয়নি। এবার শাহানা হানিফ কাউন্সিলওম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সেই সংকট দূর হয়েছে।

ব্রুকলিনের এ এলাকায় স্থায়ী একটি শহীদ মিনারের প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহানা বলেন, নানাবিধ কারণে এই সিটির কোথাও স্ট্যাচু জাতীয় কিছুর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে কুইন্সে শহীদ মিনার আদলে কিছু একটা করার কার্যকর আলোচনা চলছে। সেটি বাস্তবায়িত হলে আমি সেভাবে চেষ্টা করব।

উল্লেখ্য, ৩১ বছর বয়সী শাহানার জন্ম ব্রুকলিনে এবং বেড়ে উঠেছেন মা-বাবার সঙ্গে চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকায়। ব্রুকলিন কলেজের ছাত্রী হিসেবে সাংগঠনিক নানা কাজে জড়িয়ে পড়েন এবং সে আলোকে পরবর্তীতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এক্ষেত্রে শাহানার কর্মপরিধি কখনই কমিউনিটির মধ্যে আটকে থাকেনি। অর্থাৎ নিকট প্রতিবেশী, তিনি যে জাতি-ধর্ম-বর্ণেরই হোক না কেন-পাশে দাঁড়িয়েছেন অকৃপণচিত্তে।

এ প্রসঙ্গে শাহানা বলেন, করোনাকালেও হেইট ক্রাইম (ধর্ম-জাতি-বর্ণগত কারণে) বেড়েছে ব্রুকলিনসহ সমগ্র সিটিতে। এটি কারও জন্যই শুভ হতে পারে না। এহেন অবস্থার অবসানে প্রতিটি মানুষকে সজাগ হতে হবে। নিকট প্রতিবেশী (তিনি যে জাতি-ধর্ম-বর্ণেরই হোন না কেন)-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে হবে। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রচিত হলে ঘৃণা অথবা বিদ্বেষের ঠাঁই হবে না। এটাই হওয়া উচিত মূল বিষয়। মৃদুভাষী শাহানা উল্লেখ করেন, আইন করে কখনই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি, হবেও না। সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হলেই হেইট ক্রাইমের যাতনা থেকে সবাই রক্ষা পাব। আমি সিটি কাউন্সিলের সব ফোরামে এ আহ্বান রাখব।

সর্বশেষ খবর