সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অন্তত ১০০ জনের টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি বলছে, চক্রটি সম্প্রতি অভিনব কায়দায় বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। টাকা আত্মসাতের জন্য তারা ভুয়া নিয়োগপত্র দেয়। চাকরির গ্যারান্টি দিয়ে টাকার গ্যারান্টি হিসেবে ব্ল্যাংক চেক ও ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প নিত চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে। গতকাল বেলা ১২টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থার অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা মেট্রো) ইমাম হোসেন। এ সময় বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা ও অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ আজাদ রহমান উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চারজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার চক্রের হোতা হারুন অর-রশিদকে (৩৬) ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নওগাঁ বদলগাছির মৃত আ. জলিলের ছেলে। তার দেওয়া তথ্যে সেকেন্দার আলী (৩৪) ও মাসুদ রানাকে (২৩) মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সরকারি দফতরের ভুয়া নিয়োগপত্র চারটি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আবেদনপত্র তিনটি, ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক ছয়টি, ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষরিত ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প ২৪টি, মন্ত্রীর সরকারি চাকরির জন্য সুপারিশকৃত ভুয়া ডিও লেটার ও বিভিন্ন ব্যক্তির ছবি ও অন্যান্য কাগজপত্র সংবলিত বায়োডাটা জব্দ করা হয়। ইমাম হোসেন বলেন, দুজন মন্ত্রীর ভুয়া ডিও লেটার জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি খাদ্যমন্ত্রীর, অপরটি রেলপথ মন্ত্রীর। তবে চক্রটি যেসব চাকরিতে পদ কম থাকে সেসব চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। কারণ ওই সব চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বেকার যুবকদের চাকরির অফার দিলে অনেকেই রাজি হয়। ৩-৫ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে নেয়। কাকতালীয়ভভাবে কখনো চাকরি হয়ে গেলে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়। বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য চক্রটি চাকরি পাওয়ার পর বাকি টাকা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে রাখে। আবার ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক চেক ও ব্যাংক স্ট্যাম্প নিয়ে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করে যে, চাকরি আপনার হবেই। এভাবেই প্রতারক চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। শুধু তাই নয়, চক্রটি বদলি বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত। বিভিন্ন মানবিক কারণ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিতে আগ্রহীদের বদলির তদবির করত।
