শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বহুরূপী দুই প্রতারক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে পৃথক অভিযানে বহুরূপী দুই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. হাফিজুল ইসলাম সরদার ওরফে ডা. মো. শফিক শাহরিয়ার ওরফে মো. শফিক ওরফে মামুন এবং চন্দ্র শেখর মিস্ত্রি। হাফিজুলকে গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ এবং চন্দ্র শেখরকে গ্রেফতার করে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেফতাররা বহুরূপী প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম ইনচার্জ এডিসি আশরাফউল্লাহ বলেন, হাফিজুল দুদকের সহকারী কমিশনার অব ইনভেস্টিগেশন, বিআরটিএর অফিসার, রাজউকের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার, আরআইসির ক্রেডিট অফিসার, দৈনিক স্বাধীন সংবাদের হেলথ অ্যাফেয়ারস এডিটর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে।

তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে হাফিজুলকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ডাক্তারের ভিজিটিং কার্ড ১২টি, পিপলস ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড কনসালটেশনের ল্যাব রিপোর্ট সরবরাহে খালি খাম ৮০টি, রিপোর্ট লেখার প্যাডের খালি পাতা ৪৫টি, দুদকের লোগো সংবলিত লিগ্যাল নোটিসের খালি প্যাডের পাতা পাঁচটি, বিআরটিএ অস্থায়ী অনুমতিপত্র (খালি ফরম) ১০ পাতা, বিভিন্ন টেলিভিশনের স্টিকার ১৩১টি, বিআরটিএর সিল তিনটি, আসামির ছবিযুক্ত দুদক, রাজউক, বিআরটিএ, আরআইসি কর্মকর্তা পরিচয়ের আইডি কার্ড পাঁচটি, একটি মোবাইল ফোন ও দুটি সিম কার্ডসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

এদিকে, ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মো. হাফিজ আল ফারুক বলেন, গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার পরিচয়ে একজন ব্যক্তি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন দেন। তিনি একজন ছাত্রকে ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাজনীনবাগ এলাকা থেকে চন্দ্র শেখর মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জব সার্কুলারের বিপরীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চাকরি প্রার্থীর সিভি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞপ্তি, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের বদলির আবেদন, বিভিন্ন সরকারি স্কুল কলেজের ভর্তির আবেদন, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম, মোবাইল নম্বর ও সিল এবং ছয়টি মোবাইল ফোন, চারটি ডেবিট কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক জব্দ করা হয়।

এডিসি হাফিজ আরও বলেন, গ্রেফতার চন্দ্র শেখর নিজেকে কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পিএস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিতেন। তিনি সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ, বদলি, স্কুল কলেজে ভর্তি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণ, গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ পাস ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। চন্দ্র শেখর যখন মোবাইল ফোনে কাউকে ফোন দিতেন, এর আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কণ্ঠ নকল করে অবিকলভাবে তার মতো করে কথা বলতেন। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল চন্দ্র শেখর।

সর্বশেষ খবর