বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

দিল্লিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা উদ্‌যাপনে বর্ণাঢ্য আয়োজন

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

ঢাকা থেকে নিয়ে আসা বাবুর্চির হাতে তৈরি কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ানোর সময় চলছিল সিলেটের লোকসংগীতের মূর্ছনা। দুয়ে মিলে সোমবার সন্ধ্যায় বর্ণাঢ্য করে তোলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা উৎসব উদ্যাপনের অনুষ্ঠান। এর আয়োজক নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশটির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের স্বর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠানটি করা হয় মিশনের খোলা প্রাঙ্গণে। উচ্ছ্বসিত ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি গতকাল সকালেই টুইট করে বললেন, ‘বাংলাদেশের বন্ধুদের সঙ্গে স্বাধীনতা দিবসে যুক্ত হতে পেরে অত্যন্ত প্রীত। অভিন্ন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভাষার দ্বারা আমরা উভয়ে সংযুক্ত। বর্তমানে আমাদের সম্পর্ক সোনালি অধ্যায়ে রয়েছে এবং এ সম্পর্ক আরও উন্নত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র মন্ত্রী ড. রাজ রঞ্জন সিং। তিনি তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ গোটা বিশ্বের সামনে এক উদাহরণ তৈরি করছে। দুই দেশের মধ্যকার যোগাযোগ ও নয়া প্রকল্প দক্ষিণ এশিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত এক নতুন পরিমন্ডল তৈরি করবে।’

দুই মন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভুবনেশ্বর কলিতাসহ শাসক দল বিজেপির পাঁচজন সংসদ সদস্য এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক মদদপুষ্ট সংস্থার প্রধানরা। ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অরিন্দম গাঙ্গুলি।

হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান তাঁর বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নচিত্র উপস্থাপন করে বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে করোনা মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হার ৭ শতাংশ হবে। এখানে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলিতভাবে উন্নয়নের যাত্রায় শরিক।’ এই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যা তুলে ধরে বলেন, ‘স্বাভাবিক কারণেই রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়েছে। এদের যদি নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানো যায় তাহলে সেটা কেবল বাংলাদেশ বা ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া এবং তার বাইরেও নিরাপত্তাজনিত সংকট তৈরি করবে। এদের মধ্যে চরমপন্থা বাড়ছে। তার ফলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। এটা ভয়ংকর বিপদ হয়ে উঠবে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আর্মি ব্যান্ড দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। দিল্লির সব মিশনের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী ও সিনিয়র সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানের আগে রবিবার দিল্লির প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় আয়োজন করা হয় কাচ্চি বিরিয়ানি ও লোকসংগীতের। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রচুর সাংবাদিক। সাম্প্রতিক সময়ে রবিবার ছুটির দিনে প্রেস ক্লাবে এত সাংবাদিক সমাগম হয়নি। সবাই এসেছিলেন সপরিবারে। হাইকমিশনার ঘোষণা করেন, অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠান আরও করা হবে এবং বাংলাদেশ মিশন দ্বারা নয়াদিল্লি প্রেস ক্লাবে প্রতিষ্ঠিত ভারতের একমাত্র ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার’ আরও আধুনিকায়ন করা হবে।

সর্বশেষ খবর