রবিবার, ১৫ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

মৌসুমের শুরুতে মিলছে আমের ভালো দাম

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীতে আম পাড়া শুরু হয়েছে শুক্রবার। গুটি জাতের আম দিয়ে শুরু হলো মৌসুম। এবার শুরুতেই আমের ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় বানেশ্বর আমের বাজারে প্রতি মণ বিভিন্ন প্রকার গুটি (আঠি) জাতের আম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে। যা গতবার শুরুর দিকে ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছরের তুলনায় গত বছর কম জমিতে (১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর) আমের চাষ হয়েছিল। তার পরেও গত বছর আমের ফলন ভালো থাকায় উৎপাদন হয়েছিল দুই লাখ ১৭ হাজার ১২৮.২৪ মেট্রিক টন আম। এবার চলতি মৌসুমে তুলনামূলক বেশি জমিতে আমের চাষ হলেও উৎপাদন কম হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬.২৪ মেট্রিক টন। এবার কেজিতে দুই টাকা দাম বাড়িয়ে প্রতিকেজি আমের গড় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ টাকা।

সেই অনুযায়ী চলতি মৌসুমে ৯০১ কোটি ৬৪ লাখ ২ হাজার ৮০ টাকার আমের ব্যবসা হবে বলে দাবি করছে কৃষি বিভাগ।

চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর কৃষি বিভাগ গড়ে ৪০ টাকা কেজি দরে আম কেনা-বেচা নির্ধারণ করায় ৮০৬ কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকার আমের ব্যবসা হয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে গত বছর শেষের দিকে আমের দাম একটু ভালো পাওয়া গেছে। তবে অধিকাংশ আমই বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। ফলে গত বছর দামের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কিন্তু এবার আমের দাম ভালো পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা।

রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারে আম বিক্রি করতে যাওয়া দুর্গাপুরের চাষি বাদল হাওলাদার বলেন, গত বছর আমের ভরা মৌসুমে রমজান মাস থাকায় আম কেনার মতো তেমন লোক ছিল না। দাম অনেক কম ছিল। এবার শুরু থেকেই আমের চাহিদা বেশি। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এবার কোনো আমই ১ হাজার ২০০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না। কিন্তু গত বছর গোপালভোগ আমও শুরুতে বিক্রি করতে হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ দরে। পুঠিয়ার শিবপুর এলাকার আরেক চাষি মঞ্জুর হাসান বলেন, এবার আঠি আমই বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ। এবার আমের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। কারণ আমের উৎপাদন কম। চাহিদাও আছে বেশি।

অতিরিক্ত খরা আর অফ সিজন হওয়ায় এবার আমের উৎপাদন কম হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এবার রাজশাহীর আমবাগানগুলোর গাছে মুকুল কম আসায় এবং খরায় মুকুল ও আমের কুঁড়ি ঝরে পড়ায় উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। রাজশাহীর আম চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাসে আম পাকে এবং শুরুতে গুটি আমই পাকতে শুরু করে। কিন্তু এবার গরমের কারণে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই বিক্রি শুরু হলো।

রাজশাহী কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন জানান, আমের মুকুল কম এলেও গত বছরের তুলনায় উৎপাদন খুব একটা কম হবে না। তবে এবার চাষিরা ভালো দাম পাবেন। কারণ এবার করোনা ধকল নেই। রমজানের পরে বাজারে এসেছে আম। চাহিদাও বেশি।

সর্বশেষ খবর