মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

২৫০ বছরের গোপাল গিরিধারী জিউর মন্দির

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

২৫০ বছরের গোপাল গিরিধারী জিউর মন্দির

নজরদারির অভাবে নওগাঁর রানীনগরের প্রায় আড়াইশ বছরের পুরনো গোপাল গিরিধারী জিউর মন্দির ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মন্দিরটির তিন ভাগের প্রায় দুই ভাগ ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে শেষাংশটুকু। এটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা এবং এলাকাবাসী। জানা গেছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে সিদ্ধ পুরুষ কান্তজী বাবাজী মহারাজ বহু চেষ্টায় প্রায় ৩৭ শতক জায়গায় ইট দিয়ে নির্মাণ করেন একটি মন্দির। সেখানে শ্রী শ্রী গোপাল গিরিধারী ঠাকুর সেবা অর্থাৎ কৃষ্ণের বাল্যস্বরূপ কষ্টি পাথরের মূর্তি স্থাপন করে পূজা-অর্চনা শুরু করেন। ফিরে যাওয়ার সময় মন্দিরের সেবায় মহারাজ প্রায় ১৬ বিঘা ফসলি জমিও দিয়েছিলেন যা এখনো মন্দিরের নামে রয়েছে। এক সময় এই মন্দিরে পূজা-অর্চনার পাশাপাশি এখানে মেলা ও উৎসবের আয়োজন করা হতো। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মন্দিরটি ফেটে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ১৯২২ সালের প্রবল বন্যায় মন্দিরের একাংশ ভেঙে যায়। মন্দির কমিটির একটানা ২৩ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী গহেলাপুর গ্রামের অমিয় কুমার শাহা জানান, দিনাজপুরের মহারাজ কর্তৃক নির্মিত এই মন্দিরটি কালের বিবর্তনে যখন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে তখন আমাদের পূর্বপুরুষরা চোর-ডাকাতের ভয়ে কৃষ্ণের বাল্যস্বরূপ কষ্টি পাথরের মূর্তিসহ অন্যান্য কারুকার্য সমৃদ্ধ প্রাচীন জিনিসপত্র গ্রামের ভিতরের একটি মন্দিরে রেখে ছিল। অনেক বছর আগে সেই মন্দির থেকে সেগুলো চুরি হয়ে যায়। মন্দির কমিটির সভাপতি বৃন্দাবন পাল বলেন, বাপ-দাদার আমলে পূজা-অর্চনা ও বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের দৃশ্যপটের সংমিশ্রণে সিদ্ধ পুরুষ কান্তজী বাবাজী মহারাজের নির্দেশে নির্মিত মন্দিরটি মুখরিত হয়ে থাকত। কালক্রমে মন্দিরটি অকেজো হয়ে পূজা-অর্চনা বন্ধ হয়ে গেলে মন্দিরের জিনিসপত্র গ্রামের ভিতরের একটি মন্দিরে রাখা হয়েছিল। তাও আবার বহু বছর আগে কৃষ্ণমূর্তিসহ বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন চুরি হয়ে যায়। গোপাল গিরিধারী জিউর মন্দির নিয়ে প্রচলিত একটি কাহিনি রয়েছে। সিদ্ধ পুরুষ কান্তজী বাবাজী মহারাজ ছিলেন নিঃসন্তান। একদিন তিনি স্বপ্নে দেখলেন তৎকালীন রাজশাহীর আত্রাই পাচুপুর স্টেটের আয়তাধীন গহেলাপুর গ্রামে মন্দির নির্মাণ করে গোপাল গিরিধারী ঠাকুর স্থাপন করে (কৃষ্ণের বাল্যস্বরূপ) সেবা করলে তিনি সন্তান লাভ করবেন। তাই এই মন্দির নির্মাণ করে গিরিধারী ঠাকুর সেবা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে সন্তান লাভ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, এই মন্দিরটির বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে লিখিতভাবে জানাব।

সর্বশেষ খবর