বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

নড়াইলে সাপের ‘যুদ্ধনাচ’

নড়াইল প্রতিনিধি

দুটি সাপের যৌনমিলন মানুষের কাছে ‘শঙ্খ লাগা’ নামে পরিচিত। অনেকে একে ‘যুদ্ধনাচ’ও বলে। গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ একে গোখরা ও দাঁড়াশ সাপের যৌনমিলনের দৃশ্য মনে করে। কালভেদে দেখা মেলে সাপের এ মিলনের দৃশ্য। তেমনই এক বিরল দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে নড়াইলের মুলিয়া ইউনিয়নের মুলিয়ায়। মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে মুলিয়া-নুনক্ষির রাস্তার ওপর দুটি দাঁড়াশ সাপের শঙ্খ লাগার দৃশ্য দেখা যায়।

নড়াইল পৌর শহরের হাফিজুর রহমান নিলু ও মির্জা মাহমুদ রন্টু জানান, মুলিয়া বিল এলাকায় নির্জন রাস্তার ওপর হঠাৎই দুটি সাপ মাথা উঁচিয়ে পরস্পরের সঙ্গে ‘শঙ্খ লাগা’ বা ‘যুদ্ধনাচ’ শুরু করে। কেউ কেউ একে গোখরা সাপের শঙ্খ লাগার দৃশ্য বলে মন্তব্য করেন।

সে সময় দুটি সাপ নিজেদের জড়িয়ে অনেক উঁচুতে উঠতে থাকে। মাটি থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করছিল। কখনো আবার মাথা উঁচু করে মারামারি করতে থাকে। চলতে থাকে ‘যুদ্ধনাচ’। এভাবে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা ‘শঙ্খ লাগা’ বা ‘যুদ্ধনাচ’ শেষ হয় অগণিত মানুষের হইচই ও চিৎকারে। পরে সাপ দুটি পাশের জঙ্গলে হারিয়ে যায়। এদিকে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা সাপের এ যৌনমিলনকে মঙ্গলজনক বা শুভচিহ্ন হিসেবে মনে করেন। জানতে চাইলে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘শঙ্খ লাগা সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণা বা বিশ্বাসের ভিত্তি নেই। সাপের শঙ্খ লাগা সাধারণ ও প্রাকৃতিক বিষয়। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সাপের মধ্যে লড়াই হয়। তবে ভারতীয় উপমহাদেশে কেবল দাঁড়াশ সাপই ‘যুদ্ধনাচ’ (কমব্যাট ড্যান্স) দেখায়। প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি পুরুষ সাপের মধ্যে এ লড়াইয়ে এরা পরস্পর দেহের অর্ধেক রশির মতো পেঁচিয়ে সমান্তরালে অথবা কিছুটা ওপরের দিকে থাকে। গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ একে দাঁড়াশের যৌনমিলনের দৃশ্য মনে করে। দাঁড়াশ নিরীহ প্রজাতির নির্বিষ ও উপকারী সাপ। এ সাপ প্রচুর পরিমাণে ইঁদুর খেয়ে ফসল রক্ষা করে বলে একে “কৃষকের বন্ধু”ও বলা হয়।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর