শনিবার, ৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

নামের মিল থাকায় ১১ ঘণ্টা হাজতবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

নাম ও ঠিকানার মিল থাকায় প্রায় ১১ ঘণ্টা হাজতবাস করেছেন আবদুর রাজ্জাক সরদার (৫৩) নামের এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে তাকে গ্রেফতার করে রাজশাহীর বাগমারা থানা-পুলিশ। পরে গ্রামপুলিশের এক সদস্য মামলার প্রকৃত আসামিকে ধরিয়ে দিলে মুক্তি মেলে রাজ্জাক সরদারের। তিনি উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রামের গরিবুল্যা সরদারের ছেলে ও পেশায় রাজমিস্ত্রি।

বাগমারা থানা পুলিশ আবদুর রাজ্জাক সরদারকে গ্রেফতার করেন নারী নির্যাতনের একটি মামলায়। রাজ্জাক সরদারের স্বজনরা জানিয়েছেন, এ মামলার প্রকৃত আসামি পাশের গনিপুর ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রামের আবদুর রাজ্জাক। মামলায় ইউনিয়নের নাম উল্লেখ ছিল না। আসামি, বাবার নাম ও গ্রামের নামে মিল থাকায় পুলিশ আবদুর রাজ্জাক সরদারকে গ্রেফতার করে। আবদুর রাজ্জাক সরদারের স্ত্রী জিন্নাতুন নেসা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১টার দিকে পুলিশ পরিচয়ে তার বাড়িতে দরজা খোলার জন্য বলা হয়। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি দরজা খুলে দিলে স্থানীয় ভাগনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম তার স্বামীর খোঁজ করেন।

জিন্নাতুন নেসা জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার কথা বলে পুলিশ তার স্বামীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ভুল হচ্ছে বলে জানালেও পুলিশ তার কোনো কথা শোনেনি। রাতে স্থানীয় তদন্ত কেন্দ্রর হাজতখানায় রাখার পর গতকাল শুক্রবার সকালে বাগমারা থানাহাজতে রাখা হয়।

গতকাল সকালে আবদুর রাজ্জাকের স্বজনরা মামলার নথিপত্র ঘেঁটে জানতে পারেন ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গনিপুর ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রামের রিনা নামের এক নারী মামলাটি করেন। মামলায় রিনার সাবেক স্বামী আবদুর রাজ্জাককে আসামি করা হয়েছে। ওই রাজ্জাকের বাবার নামও গরিবুল্যাহ। আবদুর রাজ্জাক সরদারের ভাই রেজাউল করিম বলেন, মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া তৎকালীন উপ-পরিদর্শক, গনিপুর ইউপি চেয়ারম্যান, মামলার বাদীসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তদের সহযোগিতা চান। সবাই আসল আসামির পরিচয় ও অবস্থান নিশ্চিত করার পর পুলিশ কর্মকর্তাকেও বিষয়টি জানান। এরপর গ্রামপুলিশের সহায়তায় আসল আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গনিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, মামলাটির প্রকৃত আসামি তার এলাকার। তবে প্রথমে ধরা পড়েছিলেন ১৭ কিলোমিটার দূরের আরেক ইউনিয়নের আবদুর রাজ্জাক। ওই ব্যক্তির পরিবারের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর প্রকৃত আসামির সন্ধান দেন তিনি। মনিরুজ্জামান বলেন, নির্যাতনের বিষয় নিয়ে এর আগে সালিশ হওয়ার কারণে আসল আসামিকে সহজে শনাক্ত করতে পেরেছেন।

ভাগনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম বলেন, নিজের, বাবার ও গ্রামের নাম মিল থাকায় নকল আসামিকে ধরা হয়েছিল। সব মিল থাকায় ওই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় আনতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরে আসল আসামিকে শনাক্ত করেন চেয়ারম্যান। এরপর নকল আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর