রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

দিল্লি ও কলকাতায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনে এবং কলকাতায় উপহাইকমিশনে উৎসবমুখর পরিবেশে ঐতিহাসিক পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপিত হয়েছে। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় নয়াদিল্লির হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচির সূচনা করেন। দিবসটি উপলক্ষে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে পাঠ করা হয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী।

হাইকমিশনার ইমরান বলেন, “বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমাদের স্বপ্নদ্রষ্টা, কালজয়ী মহানায়ক, যিনি দেশকে নিয়ে অফুরান স্বপ্ন দেখেছেন, দেশের মানুষকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোপান বেয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। পদ্মা সেতু বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণের পথে আমাদের আরও এক ধাপ এগিয়ে দিল।” আলোচনা পর্ব শেষে উপস্থিত সবাই দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরাসরি যুক্ত হন এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং সাংবাদিক ও মিডিয়া কর্মীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এদিকে কলকাতা উপদূতাবাসের অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ বলেছেন,  প্রত্যয় থাকলে, ভালোবাসা থাকলে, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে এ রকম একটা সেতু তৈরি করা যায়। গতকাল কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের বাংলাদেশ গ্যালারিতে জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর লাইভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে এদিন কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন প্রাঙ্গণে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক স্নেহাশীষ সুর, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, প্রথম সচিব মোহাম্মদ বাশির উদ্দিন প্রমুখ। 

আবেগতাড়িত এই চিত্রপরিচালক জানান, ‘আমি খুবই আলোড়িত। কারণ পদ্মা সেতু নির্মাণ যেভাবে হয়েছে তাতে বুঝি প্রত্যয় থাকলে, ভালোবাসা থাকলে, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে, এটা করা যায়।’

গৌতম ঘোষ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমি সেখানে শুটিং করতে গিয়েছিলাম। তখন আমার মনে হচ্ছিল পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে এরকম বড় মাপের একটি সেতু নির্মাণ অসাধারণ কাজ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি স্যালুট জানাই। কারণ তাঁর নেতৃত্বে এত বাধা, বিপত্তি সত্ত্বেও এটা সম্ভব হয়েছে।’ ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবির নির্মাতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘নদীকে নষ্ট না করে, মানুষ কীভাবে ব্যবহার করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। যদি ভালো করে ব্যবহার না করা হয় তবে যে কোনো নদীই ক্ষতির কারণ হতে পারে।’  পবিত্র সরকার বলেন, ভারতের অজস্র মানুষ বাংলাদেশে যেতে চান, আবার বাংলাদেশের মানুষ এখানে আসতে চান। সেতুটির কারণে পর্যটন দিক থেকে যেমন উন্নতি হবে, তার অর্থনৈতিক পণ্য পরিবহনের দিক থেকে বিশাল সুযোগও হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে দুই দেশের মানুষ একে অপরকে আরও ভালো করে জানতে পারবে, বুঝতে পারবে। ফলে এই একটা বৃহৎ মানবিক ক্ষেত্র বিস্তারিত হবে। তার মতে, যে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি হবে সেটা অপরিসীম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার জন্মস্থান। জন্মস্থান তো বদলাবে না। মৃত্যু কোথায় হবে আমি জানি না, তবে পূর্ববাংলার মানুষ হিসেবে আমি মনে করি পশ্চিমবাংলার মানুষ অনেকে জানতে চান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পূর্ববাংলা কীভাবে এগিয়ে চলছে।

সর্বশেষ খবর