রাজধানীতে দুই বাসের প্রতিযোগিতার জেরে পথচারী নিহতের ঘটনায় মো. আল আমিন নামের এক বাসচালককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-৩-এর একটি দল রবিবার রাতে মুন্সীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। র‌্যাব বলছে, গত পাঁচ বছর ধরে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’ ছাড়াই তিনি বাস চালিয়ে আসছিলেন।

গত শনিবার সকালে গুলিস্তানে মনজিল এক্সপ্রেস পরিবহনের দুটি বাস ‘প্রতিযোগিতা করে’ গাড়ি চালানোর সময় চাপা পড়ে নির্মম মৃত্যু হয় ফরিদপুরের বোয়ালমারীর মো. জাহাঙ্গীর মোল্লার (৩৫)। দুর্ঘটনার পর চালক বাস রেখেই পালিয়ে যায়। গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আমিন লাইসেন্স আছে বলে দাবি করলেও সেটি দেখাতে পারেননি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। প্রথমে হেলপারি, পরে নিজেই গাড়ি চালানো ?শুরু করেন। গাড়ি চালানোর ওপর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণও তার নেই। আল আমিন সহকারী হিসেবে কাজ করার সময় চালকের কাছ থেকে ড্রাইভিং শেখেন। ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে তার কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই।

এরপর তার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে বলাকা বাসে সহকারীর কাজ পান ২০১২ সালে, সেটি চালিয়ে গেছেন চার বছর। এরপর ২০১৭ সালে চালক হিসেবে দৈনিক ৮০০ টাকা মজুরিতে মনজিল এক্সপ্রেস পরিবহনের বাস চালানো শুরু করেন।

র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক বলেন, বাস চাপায় নিহত জাহাঙ্গীর মোল্লার পরিবারে বয়স্ক মা, স্ত্রী ও চার সন্তান রয়েছে। কৃষিকাজ করে তিনি একাই সংসার চালাতেন। তার বড় মেয়েটির বয়স আট বছর এবং সবচেয়ে ছোট মেয়েটি চার মাসে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে জাহাঙ্গীরের পুরো পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে বলেও জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

লে. কর্নেল আরিফ বলেন, ঘটনার দিন (২ জুলাই) সকালে মনজিল এক্সপ্রেস পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৯৬৩০) বাস নিয়ে রাজধানীর চিটাগাং রোড থেকে কামারপাড়ার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন আল আমিন। পরের স্টপেজে বেশি যাত্রী ওঠানোর আশায় আল আমিন গুলিস্তানে এসে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে থাকেন। এ সময় অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে মনজিল এক্সপ্রেস পরিবহনের চালক আল আমিনের বাসটি অপর বাসকে ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারালে জাহাঙ্গীর মোল্লাকে চাপা দিয়ে আইল্যান্ডে উঠে যায়। এ ঘটনার পরপরই আল আমিন জনরোষের ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান বলে জানান র‌্যাব-৩ অধিনায়ক।