বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বগুড়ায় পত্রিকার কার্যালয় ও সম্পাদকের বাসায় সন্ত্রাসী হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

সাপ্তাহিক আজকের শেরপুর পত্রিকার কার্যালয় ও পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ মুন্সী সাইফুল বারী ডাবলুর বাসায় হামলা চালিয়েছে রাজ্জাক বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা। ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় শহরের শান্তিনগরের বাসা ও সংলগ্ন পত্রিকার কার্যালয়ে এ হামলা ঘটে। পরদিন পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নাহিদ আল মালেক বাদী হয়ে শেরপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাসুদুর রহমান লিটন নামে এজাহার নামীয় একজনক গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে গতকাল বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

সেই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত অন্যদের অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। অভিযোগে জানা যায়, স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী (ফড়িয়া) আবদুর রাজ্জাক রবিবার শেরপুর পৌর শহরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কসংলগ্ন শান্তিনগরে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে সাপ্তাহিক আজকের শেরপুর পত্রিকা কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্তূপ করে রাখেন। বিষয়টি দেখে পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নাহিদ আল মালেক চামড়া সরিয়ে নেওয়ার জন্য আবদুর রাজ্জাককে অনুরোধ করেন। কিন্তু চামড়াগুলো সরিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তিনি। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়। কিন্তু কিছু সময় পরই আবদুর রাজ্জাকের ভাড়াটে একদল মুখচেনা সন্ত্রাসী রামদা, হাঁসুয়াসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শান্তিনগরে এসে অবস্থান নেয়। তারা অস্ত্র উঁচিয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদর্শন করে। তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে হাবিল খন্দকার ওয়াই ও লিটন ভাটকে ধাওয়া দেয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

আত্মরক্ষার্থে সাপ্তাহিক আজকের শেরপুর পত্রিকার সম্পাদকের বাসায় প্রবেশ করে প্রধান ফটক লাগিয়ে দেন তারা। এরপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ওই বাসায় হামলা চালায়। তারা অস্ত্র দিয়ে বাসার প্রধান ফটকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে পত্রিকার সম্পাদক মুন্সী সাইফুল বারী ডাবলু বাইরে থেকে বাসায় এলে প্রধান ফটকে হামলাকারীদের তাণ্ডব দেখতে পান এবং তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালান। এ সময় শান্তিনগর মহল্লার লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উঁচিয়ে নানা হুমকি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম পত্রিকার কার্যালয় ও সম্পাদকের বাসায় যান এবং আইনানুগ পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে পুলিশ বিভাগকে নির্দেশ দেন।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ছাড়া তিনি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনেন। পরে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর