রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
সেমিনারে অভিমত

অর্থ পাচার দেশের সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ পাচার দেশে চলমান সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। গতকাল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশের টাকা পাচারে কারা জড়িত আপনারা তাদের পোষেণ, শেয়ার খান। এলএনজি ক্রাইসিস, লোডশেডিং করেছেন। ওরা ঠিকই সুবিধা গ্রহণ করে কিন্তু কষ্ট পায় জনগণ।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘বর্তমান সংকট, দায় এবং সমাধান’ শীর্ষক এ সেমিনারে বক্তৃতা করছিলেন। আরও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বি ডি রহমত উল্লাহ, সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতা শওকত মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহেদ উর রহমান।

মান্না বলেন, মফস্বল শহরে ৬/৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। রাজধানীতে লোডশেডিং এক ঘণ্টা থাকার কথা কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় দুই ঘণ্টাও করা হচ্ছে। কিন্তু উনাদের দুই ঘণ্টাও লোডশেডিং সহ্য হয় না। তিনি আরও বলেন, এবারও ভোট হবে ইভিএমে। ইভিএমের বাটনে টিপ দেবেন একটায়, পড়বে অন্যটায়। ভোট দেওয়ার কোনো রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। ভোটের কোনো গ্যারান্টি নেই। এই ভোট চলবে না। এই সরকার ও ইলেকশন কমিশনের অধীনে ভোটে অংশ করব না। নাগরিক ঐক্য সভাপতি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে দেশে চলমান সমস্যা নিয়ে কেউ আলোচনা পর্যন্ত করতে চাইনি। আমরা এসব সমস্যার কথা বারবার তুলে ধরেছি। এ জন্য আমাদের বলা হয়েছে, বেশি কথা বলছি। ধমক পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অর্থনীতির সব সূচক ভালো থাকার পরও শ্রীলঙ্কার দ্রুত পতনের পেছনে দায়ী গোষ্ঠীতন্ত্র। তারা গোষ্ঠীতন্ত্র তৈরি করেছিল। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেয়নি। শ্রীলঙ্কার সফল একজন গভর্নর পদত্যাগ করেছেন। কারণ, সরকার গভর্নরের কোনো কথা শোনেনি। সেখানে যা কিছু করেছে, রাজা বাদশাহরা করেছেন। তাঁরা যা করতে বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাই করেছে।

সাবেক এই গভর্নর বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে শিক্ষা নেব। তারা সময়মতো সমস্যাগুলোর প্রতিকার করেনি। অনেক দিন থেকে তাদের সমস্যা ছিল। শ্রীলঙ্কায় অনেক বুদ্ধিমান মানুষ আছেন, অনেক বিজ্ঞ লোক আছেন। তাঁদের কথা শ্রীলঙ্কার সরকার শোনেনি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বি ডি রহমত উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প খুঁজে পাবেন না। এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২০০৫ কিংবা ২০০৬ সালে বিদ্যুতের ক্রাইসিস ছিল। সেই ক্রাইসিস পুঁজি করে এই সরকার তখন কুইক রেন্টাল প্রকল্পে যায়। যে পাওয়ার স্টেশন তিন বছরের জন্য করা হয়েছিল, সেই পাওয়ার স্টেশন বছরের পর বছর থাকছে। কিন্তু কেন? কাদের স্বার্থে এটা করা হয়েছে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, কেবল বিদ্যুৎ খাত নয়, সব খাতে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এ দেশের কিছু অর্থনীতিবিদ তাঁদের বক্তব্যে বর্তমান সংকটকে সরকারের ভুল নীতি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। এ দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে যত ভয়ংকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো সব সরকার ঠান্ডা মাথায়, পরিণতি জেনে-বুঝে নিয়েছে।

সর্বশেষ খবর