শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

জুলাইয়ে সামান্য কমেছে মূল্যস্ফীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির পারদ সামান্য নেমেছে। গতকাল প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মাসে ‘পয়েন্ট টু পয়েন্ট’ ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বিশ্ববাজারে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির হাত ধরে দেশে মূল্যস্ফীতির হার গত জুনে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশে পৌঁছায়, যা নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেখান থেকে কমে জুলাইয়ে এই ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান তাঁর দফতরে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে পরিসংখ্যান ব্যুরোর এ প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, ‘আমার মনে হয় আগস্টে মূল্যস্ফীতির এ হার আরও একটু কমবে। আমি গণক নই, তবে আমার ধারণা কমার একটা লক্ষণ আমি লক্ষ্য করছি।’ তিনি জানান, জুলাইয়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার আগের মাসের তুলনায় ০.৮ শতাংশ কমেছে। তবে গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল।

মহামারির ধাক্কা সামলে অর্থনীতির গতি বাড়ায় গত বছরের শেষ দিক থেকেই মূল্যস্ফীতি ছিল বাড়তির দিকে। চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্য মূল্য বাড়তে শুরু করে। তার প্রভাব পড়ে অন্যান্য পণ্যেও।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গত জুলাইয়ে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ হয়েছে, যা জুনে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল। আর খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি জুনে ছিল ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এক মাসের মাথায় তা বেড়ে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে।

গ্রামের মানুষকে মূল্যস্ফীতির কারণে ভুগতে হচ্ছে শহরের মানুষের চেয়ে বেশি। জুলাই শেষে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমে ৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ হয়েছে, যেখানে শহরে এ হার ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। গ্রামে খাদ্য খাতে ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে জুলাইয়ে। আর খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর শহরাঞ্চলে খাদ্য উপখাতে ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

জুনের তুলনায় জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আসাকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে বর্ণনা করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যে শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে না, এটা তার ‘প্রমাণ’। অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। পুরো অর্থনীতিটাকে এটা রিফ্লেক্ট করে; এটা অর্থনীতির একটা প্রতিচ্ছবি। এ মূল্যস্ফীতি পুরো অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে। আর কম আয়ের মানুষের ওপর এটা আঘাত করে বেশি। জনগণের সরকারকে এটা চিন্তা করতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষের লাইফ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

পরিকল্পনামন্ত্রীর ভাষায়, জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি যতটা কমেছে, সে হার ‘অনেক কম’ বলে মনে হলেও বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এটাও ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’। মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেন থেকে খাদ্য নিয়ে জাহাজ ছাড়া শুরু হয়েছে। অলরেডি জাহাজ ভেসে বেড়াচ্ছে, আমরাও পাব। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা ফল করেছে। এ বেনিফিট এখন আরও আসবে।

সর্বশেষ খবর