রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ

রাবি শিক্ষার্থীকে মারধর চাঁদাবাজি

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে হলকক্ষে আটকে মারধর ও ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এসব কথা কাউকে জানালে বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো অবস্থা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে শুক্রবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রের নাম সামছুল ইসলাম, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম ভাস্কর সাহা, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পড়াশোনার পাশাপাশি মোবাইল ফোন সার্ভিসিং করে পরিবারের খরচ চালান তিনি। শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে রুমে ডেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা। অস্বীকৃতি জানালে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আটকে রেখে ভুক্তভোগীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন ছাত্রলীগ নেতা ভাস্করসহ কয়েকজন। এ সময় তার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন ভাস্কর। তাছাড়া এসব কথা সাংবাদিক কিংবা পুলিশকে জানালে বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো তাকেও মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী সামছুল ইসলাম বলেন, মোবাইল সার্ভিসিং করার জন্য ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর চাঁদা দাবি করেন। আমি ৫ হাজার টাকা দিতে চাই। তখন ৫ হাজার টাকায় হবে না বলে রুমে ডেকে নিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বলেন, কারও ইন্ধনে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এসব করা হচ্ছে। আমি কারও কাছে চাঁদা দাবি করিনি। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করিনি। শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমি এ বিষয়ে মাত্র অবগত হলাম। খোঁজ নিচ্ছি, সত্যতা প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে হাত দেওয়া অপরাধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ পত্রটি হস্তান্তর করেছি। প্রমাণ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সহকারী প্রক্টর ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের জহুরুল আনিস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল ইসলাম বলেন, তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

সর্বশেষ খবর