শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ফুঁতে রোগমুক্তির গুজবে মানুষের ভিড়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল বাজারে ফুঁর মাধ্যমে চিকিৎসা দিচ্ছেন শামছুন নাহার (৭০) নামের এক মহিলা। গ্যাস্ট্রিক, চোখের সমস্যা, প্যারালাইসড, পেটব্যথাসহ দুরারোগ্য যে কোনো ব্যাধির চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এভাবে চিকিৎসা করালে রোগীর ভালো হওয়ার চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। একসময় রোগ কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে যাবে। তখন চিকিৎসা করালেও ভালো হবে না। স্থানীয়রা জানায়, মহিলাটি পাগল। একেক সময় একেক নাম-ঠিকানা বলেন। দুই বছর আগে শামছুন নাহার স্থানীয় এক পাগলের সঙ্গে পাকশিমুল বাজারে আসেন। তার এক পা ভাঙা। হাঁটতে পারেন না। হামাগুড়ি দিয়ে চলেন। বাজারের বিভিন্ন দোকানের বারান্দায় পড়ে থাকতেন। মানুষ ইচ্ছা করে কিছু দিলে খেতেন। দুই-তিন মাস আগে হঠাৎ এক ব্যক্তিকে তিনি ফুঁঁ দিলে তার মাথাব্যথা ভালো হয়ে যায়। এরকম গুজব এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর থেকে আশপাশের গ্রাম থেকে রোগী আসা শুরু হয়। রোগীরা স্বেচ্ছায় ৫, ১০ ও ২০ টাকা দিয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধার হাতে।

পাকশিমুল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পরিত্যক্ত খোলা টিনের নিচে বসে রোগীকে ফুঁ দিচ্ছেন বৃদ্ধা। বেশির ভাগ রোগীই নারী ও শিশু। পাকশিমুল বাজারের চা বিক্রেতা মুসলিম উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন শত শত রোগী আসেন। এতে দোকানে বেচাকেনাও আগের চেয়ে বেশি। যতই দিন যাচ্ছে রোগীর ভিড় বাড়ছে। আর আমারও আয় অনেক বেড়ে গেছে। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোমান মিয়া বলেন, মানুষ বিশ্বাস করে এর পেছনে দৌড়াচ্ছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ফুঁর মাধ্যমে কোনো চিকিৎসা নেই। আমাদের দেশে নব্বই ভাগ মানুষ এখন অসচেতন। ঝাড়ফুঁক একটি কুসংস্কার। এতে কোনো রোগ ভালো হয় না বরং রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় থাকে। পুলিশ জানায়, বৃদ্ধা পাগল প্রকৃতির। ওসি ও ইউএনও স্যারের নির্দেশে সরেজমিন গিয়ে দেখে আসলাম। মানুষ ৫-১০ টাকা দেয়। কেউ দেন না। একজন দোকানির কাছে টাকা জমা থাকে।

 

সর্বশেষ খবর