বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ শাখা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়া, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম করে অসম্মান করার প্রতিকার চেয়ে কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে সোমবার বিকালে স্মারকলিপি দিয়েছে। সম্প্রতি তার কিছু ভিডিও সামনে এসেছে। আর তা নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি। স্মারকলিপিতে ভারতবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ২০ সদস্যের এক প্রতিনিধি উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসের হাতে স্মারকলিপি এবং অভিযোগের পক্ষে বেশ কিছু ভিডিও ক্লিপিংস তুলে দেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল, সুব্রত মৈত্রসহ দলের বিধায়করা।
শুভেন্দু অধিকারী জানান, বাংলাদেশের উপদূতাবাসে গিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা নাক গলাতে চাই না। আমরা মমতা ব্যানার্জির মতো নই যে তিনি শরণার্থীদের বলছেন সিএএ করতে দেব না, আবার রোহিঙ্গাদের জন্য ঘর, বাড়ি সবকিছু খুলে রেখেছেন। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। কিন্তু সেদেশে যে ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়েছে, যেভাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম করে অপমান করা হয়েছে সেটা প্রত্যেকটা ভারতীয়র অপমান। এটা কোনোভাবেই আমরা বরদাশত করব না। ভারত আমাদের মা। ভারতমাতার অপমান মানে আমাদের অপমান। হিন্দুদের সঞ্জীবনী মন্ত্র ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ নিয়ে কুরুচিকর স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা সবাই দেখেছি এবং তা নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন।’ শুভেন্দু এও বলেন, ‘ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে দোকানে দোকানে ঢুকে রাজাকার, জামায়াত, হেফাজতের লোকেরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করার ডাক দিচ্ছে। কিন্তু ভারত থেকে পিঁয়াজ না গেলে সেদেশে ৩০০ টাকা দাম হবে। এসব কেন করা হচ্ছে?’
কলকাতার বেকবাগানে অবস্থিত বাংলাদেশ উপদূতাবাস কার্যালয় যাত্রাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি প্রতিনিধি দলের বচসা, ধস্তাধস্তি হয়। উপহাইকমিশন প্রাঙ্গণে প্রবেশের ঠিক আগেই পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় প্রতিনিধি দলকে। আর পুলিশের ব্যারিকেড উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগোতে গেলেই এক প্রকার ধস্তাধস্তি শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে। বিজেপি বিধায়করা এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে ‘হায় হায়’ স্লোগান দেন।
পরে দূতাবাসের কর্মকর্তা সিকদার মোহাম্মদ আশরাফুর রহমান বাইরে এসে শুভেন্দু অধিকারীসহ প্রতিনিধি দলের বিধায়কদের ভিতরে আমন্ত্রণ জানান।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমরা গত শনিবার ডেপুটি হাইকমিশনারকে মেইল করেছিলাম। তিনি আমাদের মেইলে সাড়া দেন এবং বিকাল ৫টায় উপহাইকমিশনে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এ রাস্তায় সাধারণত ব্যারিকেড থাকে না কিন্তু মমতার পুলিশ প্রথমে আমাদের আটকায়। ‘আমরা জঙ্গলের রাজত্বে বসবাস করি।’ আইনের মধ্যে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের শিক্ষা দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন শুভেন্দু অধিকারী।