৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ১০:৩১
দুর্ভোগে দেড় কোটি আমেরিকান, নিহত ১৬

তুষারঝড়ের কবলে আমেরিকা, ৩ লক্ষাধিক বাংলাদেশিও গৃহবন্দি

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক

তুষারঝড়ের কবলে আমেরিকা, ৩ লক্ষাধিক বাংলাদেশিও গৃহবন্দি

নতুন বছরের প্রথম প্রহর শুরু হাড় কাঁপানো শৈত্য প্রবাহের মধ্য দিয়ে। যার চরম অবনতি ঘটে বৃহস্পতিবার ভোরে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রার সঙ্গে যোগ হয় ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে প্রবাহিত তুষার ঝড়। আমেরিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যের প্রায় দেড় কোটি আমেরিকান গৃহবন্দি হয়ে দিনাতিপাত করেন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। এর মধ্যে ৩ লাখের বেশি বাংলাদেশিও রয়েছে। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে নিহত হয়েছেন ১৬ আমেরিকান।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এর মধ্যে উইসকনসিন-৬, টেক্সাস-৪, নর্থ ক্যারোলিনা-৩, মিসৌরি, মিশিগান এবং নর্থ ডাকোটায় একজন করে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, এসব এলাকায় ১২ ইঞ্চি থেকে ২৪ ইঞ্চি পর্যন্ত তুষারপাত হয়েছে। এ ছাড়াও বস্টন ও লং আইল্যান্ডে উপকূলিয় এলাকায় ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। বস্টনের রাস্তা ডুবে যায় গলে যাওয়া বরফের পানিতে।

ভয়ংকর দুর্যোগের কারণে নিউইয়র্ক, বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, বাল্টিমোর, প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ডসহ ১১টি সিটির সকল স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয় ৪ জানুয়ারি। সরকারি অফিসে উপস্থিতির ওপর কোনো বাধ্যকতা ছিল না।

নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ম্যাসেচুসেটস, কানেকটিকাট প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় জরুরু অবস্থা জারি করা হয়। লোকজনকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হবার পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজ্য গভর্নরেরা।

নিউইয়র্ক এবং নিউজার্সিতে অবস্থিত এয়ারপোর্টসমূহে দুই হাজার ফ্লাইটসহ বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ভার্জিনিয়া প্রভৃতি এলাকার ৪ হাজার ফ্লাইট বাতিল করতে হয় বলে জানিয়েছেন পোর্ট অথরিটির নির্বাহী পরিচালক রীক কটন। যাত্রীদের পরবর্তী ফ্লাইটের কনফার্মেশনের অপেক্ষায় থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড, ওজনপার্ক, পার্কচেস্টার, হাডসন, নিউ জার্সির প্যাটারসন, আটলান্টিক সিটি, পেনাসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়া, আপারডারবি, মিল বোর্ণ সিটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার সকল দোকানপাট ছিল জনমানব শূন্য। নিউইয়র্ক সিটিতে ২৫ হাজারের অধিক বাংলাদেশি ট্যাক্সি ড্রাইভারের ৯০ ভাগ বেরই হতে পারেননি।

পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের মিল বোর্ন সিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নূরল হাসান, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের হাডসন সিটির কাউন্সিলম্যান শেরশাহ মিজান এবং লং আইল্যান্ডের লিন্সব্রুক সিটির ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল জানান, ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে তুষারঝড়ে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। তাপমাত্রা নেমে হিমাঙ্কের নীচে আসায় লোকজন ঘরের বাইরে আসেননি। সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ আর এ্যাম্বুলেন্স ব্যতিত যান চলাচল ছিল একেবারেই কম।

নিউইয়র্ক সিটির বাস ও সাবওয়ে চলাচল করলেও যাত্রীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। আবহাওয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামী রবিবার পর্যন্ত উপরোক্ত এলাকার তাপমাত্র হিমাঙ্কের নিচেই থাকবে।

বিডি প্রতিদিন/৫ জানুয়ারি, ২০১৮/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর