রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আবাসনে ৯০% চাহিদা মেটায় বেসরকারি খাত

মো. আশরাফুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবাসনে ৯০% চাহিদা মেটায় বেসরকারি খাত

রাজধানীতে জনসংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আবাসন ব্যবস্থাও। এসব আবাসনের কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত সরকারি ও বেসরকারি খাত। তবে এর মধ্যে ঢাকা শহরে আবাসন ব্যবস্থার ৯০ ভাগ জোগান দেয় বেসরকারি খাত। জনগণের চাহিদার প্রেক্ষাপটে এ খাত দ্রুত বর্ধিত হচ্ছে। সোমবার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম তার কার্যালয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন। আশরাফুল ইসলাম বলেন, আবাসন খাতকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের সংবিধানেও বাসস্থানকে মৌলিক চাহিদা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য : সকলের জন্য আবাসন নিশ্চিতকরণ। আর এই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। রাজউক ঢাকা মহানগর এলাকার মধ্যে প্লট ও ফ্ল্যাট জোগানের দ্বারা ক্রমবর্ধমান মানুষের আবাসন সংস্থানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

তিনি বলেন, রাজউক প্রণীত রিভাইজড ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের সাশ্রয়ী আবাসনের জন্য প্রণোদনা ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারাও সাশ্রয়ী আবাসন নির্মাণের জন্য আগ্রহী হন। ২০৩৫ সালে ঢাকা মহানগর এলাকার প্রক্ষেপিত জনসংখ্যা হবে ২৬ মিলিয়ন। এই জনগোষ্ঠীর আবাসন, কর্মসংস্থান ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধার জন্য ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে (২০২২-২০৩৫) ৯১,৮৯৭ হেক্টর নগর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারাও আবাসনের জোগানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে।

এই নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, আবাসনকে প্রধানত দুটি দিক থেকে দেখা বা বিশ্লেষণ করা যেতে পারে- চাহিদা ও জোগান। চাহিদার কেন্দ্রে আছে যারা এই আবাসনের ব্যবহারকারী অর্থাৎ নগরে বসবাসকারী মানুষ। এ শহরের জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ নিম্নমধ্যবিত্ত বা তারও নিচে অবস্থান করছে। অপরপক্ষে জোগানের দিকটি দেখলে মূলত আবাসন নির্মাণকারী (ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান) সিংহভাগের জোগানদাতা এখনো বেসরকারি খাত।

আবাসন খাতের চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবাসন খাতের মূল চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের কর্মস্থলের সন্নিকটে ক্রয়ক্ষমতা ও সামর্থ্যর সীমার জোগান দেওয়া। এমন অবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি আনুষ্ঠানিক খাতের মাধ্যমে সরাসরি আবাসন ইউনিটের জোগানের লক্ষ্যে এ খাতকে যথাযথ সহায়তা ও প্রণোদনা প্রদান করা উচিত। (ঢাকার আবাসনের সিংহভাগ জোগানদাতা এখনো বেসরকারি খাত।  মোট আবাসন চাহিদার ৯০ শতাংশ জোগান দেওয়া বেসরকারি আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে) তাই শহরের আবাসন চাহিদা পূরণে ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।  ব্লকভিত্তিক আবাসন পদ্ধতির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো উল্লম্ব অর্থাৎ উচ্চতা সম্প্রসারণে উৎসাহিত করা, যেন যত্রতত্র নগরাঞ্চল সম্প্রসারণ কমিয়ে আনা এবং শহরের নিচু জমি ও কৃষি জমির সুরক্ষা হয়।

সর্বশেষ খবর