রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
মাহির আলী খাঁন রাতুল, কো-চেয়ারম্যান, রূপায়ণ গ্রুপ

সবার জন্য সবুজ ও পরিবেশবান্ধব আবাসন গড়তে চাই

মানিক মুনতাসির

সবার জন্য সবুজ ও পরিবেশবান্ধব আবাসন গড়তে চাই

রূপায়ণ গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল বলেছেন, আমরা এমন একটি আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই যা হবে সবুজ ও পরিবেশবান্ধব।  খেলার মাঠ, পুকুর, জলাশয়, লেক, খোলামেলা পরিবেশ থাকবে। কাছাকাছি বাজার ব্যবস্থা থাকবে। যোগাযোগব্যবস্থা হবে অধিকতর সহজ। বিয়ে, জন্মদিনসহ যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান করার জন্য থাকবে কমিউনিটি সেন্টার, ক্লাব হাউস, মসজিদ, জিমনেশিয়ামের ব্যবস্থা। এটাকে আমরা ভ্যালু ফর মানি বলছি। অর্থাৎ ধরুন- গুলশান-বনানীর এমনও জায়গা আছে যেখানে ১০ কোটি টাকা খরচ করলেও উপরোক্ত পরিবেশ আপনি পাবেন না। কিন্তু আমাদের উত্তরা প্রকল্পে আমরা সেটা নিশ্চিত করছি। এখানে যেসব খোলা জায়গা রয়েছে সেগুলো আমরা প্যাকেজের সঙ্গেই দিচ্ছি। আবার এসব সুবিধা পেতে হলে অতিরিক্ত পেমেন্ট করতে হয়। আমাদের এখানে কিন্তু সেটা নেই। আমরা একটা প্যাকেজের মধ্যেই এসব সুবিধা দিচ্ছি।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, এটি অনেকটা ঢাকার বুকে ছোট্ট এক সবুজ শহর। রাজধানীর উত্তরায় রূপায়ণ সিটি উত্তরা নামের প্রকল্পে মনোরম এই পরিবেশেই গড়ে উঠছে সারি সারি ভবন। ১২০ ফুট প্রশস্ত সড়ক। তার দুই পাশ ও মাঝের সড়ক দ্বীপে পাম, খেজুরসহ নানা প্রজাতির গাছ। ফুটপাতে গাছের নিচে সময় কাটানোর জন্য আছে বসার জায়গা। সড়কবাতিগুলোও বেশ দৃষ্টিনন্দন। মনোরম এই পরিবেশেই গড়ে উঠছে সারি সারি ভবন। প্রতিটি ভবনের নকশাও আবার একই রকম। ভবনের সামনে-পেছনে খোলা জায়গা থাকায় অ্যাপার্টমেন্টের ভিতর থেকেই আকাশ দেখার সুযোগ যেমন আছে, তেমনি পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস।

তিনি বলেন, এখানে রয়েছে- স্কুল, খেলার মাঠ, মসজিদ, ব্যায়ামাগার, সুপারশপ, শপিং মল, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, চার তারকা মানের হোটেলসহ সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা। তারপরও পুরো প্রকল্পের ৬৩ শতাংশ জায়গাই খোলা, মানে সেখানে কোনো ধরনের স্থাপনা থাকবে না। তার মধ্যে ৪১ শতাংশে থাকবে সবুজ গাছপালা। প্রকল্পের ভিতরে সব মিলিয়ে থাকছে সাড়ে ছয় কিলোমিটার সড়ক। সেই সড়ক কিংবা ফুটপাত দিয়েই সকাল বা বিকালের জগিংটা করে নেওয়া যাবে সহজেই।

এখানকার যোগাযোগব্যবস্থাও খুবই সহজ। উত্তরার হাউস বিল্ডিং থেকে রিকশায় চড়ে মাত্র ৮-১০ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় রূপায়ণ সিটি উত্তরার মূল ফটকে। আবার সেখান থেকে বিভিন্ন রুটের বাস পাওয়া অতি সহজ। মেট্রোরেল লাইন-৬ চালু হলে তো আরও সহজতর হবে যোগাযোগব্যবস্থা। মেট্রোতে চেপেও চলে যাওয়া যাবে রাজধানীর যে কোনো প্রান্তে।

রূপায়ণ সিটি উত্তরার সব বাসিন্দার জন্য একটি কমিউনিটি ক্লাব ভবন করা হচ্ছে। সেখানকার ছাদে সুইমিং পুল থাকবে। তা ছাড়া অতিথিদের রাতযাপনের জন্য আবাসন, ব্যায়ামাগার, ইনডোর গেমস এবং একবারে ২ হাজার মানুষ নিয়ে সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য হল থাকবে। আর পুরো শহরের ব্যবস্থাপনা রূপায়ণ নিজেরাই করছে।

সবুজ শহরটি পরিপূর্ণ করতে ৩০ বিঘা জমির ওপর চারটি বেসমেন্ট ছাড়াও ১০ তলা মাল্টি কমার্শিয়াল ভবন করছে রূপায়ণ গ্রুপ। ম্যাক্সাস নামের ভবনের আটটি টাওয়ারের সাতটিতে থাকবে হেলিপ্যাড। প্রায় ৩০ লাখ বর্গফুটের জায়গায় থাকবে চার তারকা মানের হোটেল, শপিং মল, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ফুডকোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। মাল্টি কমার্শিয়াল এই ভবনের পাইলিং অনেক দূর এগিয়েছে। মূল কাজ আগামী ডিসেম্বরে শুরু হওয়ার কথা।

তিনি বললেন, আবাসন খাতে রূপায়ণ শুরু থেকেই নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করছে। পরিকল্পিত শহর করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, একক ভবনের প্রকল্পে থাকার জায়গার সমাধান দেওয়া যায়; তবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা যেসব দরকার, তা দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই আমরা মানুষের জীবন ও জীবিকার মান উন্নয়নের চিন্তাভাবনা থেকে পরিকল্পিত সবুজ শহর করার স্বপ্ন দেখেছি, যা বর্তমানে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে। এখানে ফ্ল্যাট কেনা মানে শহর কেনা।

বর্তমানে বিশ্ববাজারে সব ধরনের নির্মাণ পণ্যের দাম অত্যন্ত চড়া। তারপরও আমরা সাধ্যের মধ্যেই রেখে সব শ্রেণির মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব আবসান গড়ার চেষ্টা করছি। তবে আবাসন খাতের অনেক কাঁচামালই আমদানিনির্ভর। এতে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়।  ধীরে ধীরে আমরা যদি এই আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনতে পারি তাহলে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।  অন্যদিকে তেমন সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন গড়ে তোলাও সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।

সর্বশেষ খবর