সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব এসিতে গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে ওয়ালটন

মো. তানভীর রহমান, চিফ বিজনেস অফিসার, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব এসিতে গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে ওয়ালটন

ওয়ালটনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ভিআরএফ ও চিলার কমার্শিয়াল এসি উৎপাদনকারী নবম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। কিন্তু বিদ্যমান পলিসিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তেমন কোনো সুবিধা পাচ্ছে না...

 

প্রশ্ন : এ বছরের রেকর্ড তাপপ্রবাহে এসির ব্যবসা কেমন চলছে?

- এ বছর এপ্রিলজুড়ে তীব্র দাবদাহের কবলে ছিল দেশ। তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ‘এসি’ কিনেছেন। সারা দেশেই উল্লেখযোগ্য হারে এসি বিক্রি বেড়েছে।

প্রশ্ন : অন্য বছরের তুলনায় এ বছর এসির চাহিদা কতটা বেড়েছে?

- অন্য বছরগুলোতে দেশে এসির বাজারে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হলেও এ বছর তীব্র দাবদাহের কারণে প্রবৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

প্রশ্ন : এ বছর এসি কেনাবেচার বাজারের চিত্রটা কেমন?

- স্থানীয় বাজারে গত বছর এসি বিক্রি হয়েছিল ৫ লাখের মতো। এ বছর এসি বিক্রির পরিমাণ ৬ লাখ ছাড়িয়েছে।

প্রশ্ন : আপনাদের কোম্পানির ব্যবসা কেমন চলছে?

- বর্তমানে দেশের এসির বাজারে মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ওয়ালটন। চলতি বছর আমাদের এসি বিক্রির যে টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছিল তার প্রায় ৭০ শতাংশ ইতোমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে।

প্রশ্ন : ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এসির বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী?

- বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। ওয়ালটন এসিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর-৩২ গ্যাস, যা পরিবেশ সুরক্ষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখে চলছে। ইতোমধ্যে ওয়ালটন এসিতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক সিএফসি এবং এইচসিএফসি গ্যাসের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে। ফলে পরিবেশবান্ধব শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র উৎপাদনে ভারত ও চীনের থেকে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ওয়ালটনের উৎপাদিত ৯০ ভাগ এসিই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ওয়ালটন যেমন পরিবেশ সুরক্ষায় অবদান রাখছে, তেমনি দেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের সুষম ব্যবহারও নিশ্চিত করছে।

প্রশ্ন : ওয়ালটন এসিতে ক্রেতাদের কী কী সুবিধা দিচ্ছেন?

- গ্রাহকরা সেরা দামে সেরা মানের এসির পাশাপাশি সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পাচ্ছেন ওয়ালটন থেকে। ওয়ালটন এসিতে গ্রাহকরা পাচ্ছেন এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, কম্প্রেসারে ১০ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি, তিন বছরের স্পেয়ার পার্টস ওয়ারেন্টি এবং ফ্রি ক্লিনিং সার্ভিস। বাংলাদেশে আইএসও সার্টিফায়েড সর্ববৃহৎ সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৮০টিরও অধিক সার্ভিস পয়েন্টের আওতায় সাড়ে ৩ হাজারের বেশি সার্ভিস পার্টনারের মাধ্যমে গ্রাহকদের দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন। দেশব্যাপী চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২০ এর আওতায় ওয়ালটন এসি কিনে ‘ননস্টপ মিলিয়নিয়ার’ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। রয়েছে কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত উপহার।

প্রশ্ন : এই মুহূর্তে এই শিল্পে কী কী সমস্যা আছে?

- ওয়ালটনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ভিআরএফ ও চিলার কমার্শিয়াল এসি উৎপাদনকারী নবম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। কিন্তু বিদ্যমান পলিসিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তেমন কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। এখনো ভিআরএফের মতো উচ্চ প্রযুক্তির এসি উৎপাদনের কিছু কাঁচামাল আমদানিতে উচ্চহারে শুল্ক দিতে হচ্ছে। ফলে ভিআরএফ এসি আমদানির তুলনায় দেশে উৎপাদনে খরচ বেশি পড়ছে।

প্রশ্ন : বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে আপনার পরামর্শ কী?

- দেশে এসি উৎপাদন শিল্পের দ্রুত বিকাশে সরকারি নীতিসহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ওয়ালটনসহ যেসব কোম্পানি এগিয়ে এসেছে, তাদের প্রচেষ্টার ফলে এ খাত এখন ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। আমদানি নির্ভর শিল্পটি এখন স্থানীয় উৎপাদন নির্ভরতায় চলে এসেছে। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আগামী বাজেটে সরকারের বিদ্যমান পলিসি সাপোর্ট অব্যাহত রাখা জরুরি। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এসি উৎপাদনে আরও বেশি প্রণোদনা দেওয়া উচিত। এ ছাড়া স্থানীয় শিল্পে উৎপাদিত চিলার এবং কমার্শিয়াল এসির বেসিক কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ভিআরএফ এসি আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো উচিত, যাতে স্থানীয় শিল্প বেশি সুবিধা পায়।

সর্বশেষ খবর