
কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রাবাসটি অবশেষে ১২ বছর পর আবারও ফিরে পেলো ‘শহীদ জিয়া ছাত্রাবাস’ নাম। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে রবিবার নামফলক পুনরায় স্থাপন করা হয়। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে নামফলক মুছে ফেলা হলেও, অবশেষে এটি আবার দৃশ্যমান হলো।
২০০৪ সালে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির উদ্যোগে ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর নামকরণ করা হয় ‘শহীদ জিয়া ছাত্রাবাস’। তৎকালীন কমিটির সভাপতি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করতো। তবে ২০১২ সালে, আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে, ছাত্রাবাসের নামফলক ও উদ্বোধনী ফলক তুলে ফেলা হয়। সে সময় বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাব। তবে এই নামফলক সরানোর বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটিতে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে এটি সরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক আহম্মেদের মতে, ২০১২ সালে তিনি যোগদানের পর দেখেছিলেন ছাত্রাবাসে একটি টিনের সাইনবোর্ড ছিল, যা কিছুদিন পর হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়। কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেনি কারা সেটি নামিয়েছে, যদিও সবাই জানত। তবে প্রতিষ্ঠানে তখনকার পরিস্থিতিতে কেউ সাহস করে কিছু বলেনি।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক আছাদুজ্জামান জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ছাত্রাবাসের কোনো নামফলক দেখতে পাননি। সম্প্রতি সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন আজাদের পরামর্শে এবং রেজুলেশনে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে আবারও ‘শহীদ জিয়া ছাত্রাবাস’ নামটি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আবুল হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে থাকা এই ছাত্রাবাসের নাম অন্যায়ভাবে মুছে ফেলা হয়েছিল। যারা এটি করেছিল, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করছি। তবে অবশেষে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এটি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, যা সবার জন্যই একটি স্বস্তির বিষয়।’
দীর্ঘ ১২ বছর পর কেশবপুর সরকারি পাইলট বিদ্যালয়ে ‘শহীদ জিয়া ছাত্রাবাস’ এর নাম ফিরে পাওয়ার ঘটনা স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল