logo
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০
মাথাল প্রতীকে নিবন্ধন পেল গণসংহতি আন্দোলন
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাথাল প্রতীকে নিবন্ধন পেল গণসংহতি আন্দোলন

অবশেষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেল গণসংহতি আন্দোলন। প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন দলটির প্রতীক হচ্ছে ‘মাথাল’। গতকাল ইসি সচিব শফিউল আজিম এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নম্বর- ১৩৮০৫২০১৮ এর বিগত ১১ এপ্রিল, ২০১৯ তারিখের প্রদত্ত রায় ও আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর বিধান অনুযায়ী প্রধান কার্যালয় ৩০৬-৩০৭ রোজ ভিউ প্লাজা, ১৮৫ বীরউত্তম সিআর দত্ত রোড, হাতিরপুল, ঢাকা ১২০৫-এ অবস্থিত গণসংহতি আন্দোলন-কে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করিয়াছে। উক্ত দলের জন্য ‘মাথাল’ প্রতীক সংরক্ষণ করা হইয়াছে এবং উহার নিবন্ধন নম্বর-০৫৩। এ নিয়ে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮টি। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আবেদন করে দলটি। এরপর সে সময়কার কে এম নুরুল হুদার কমিশন নিবন্ধন বাতিল করলে আদালত দলটিকে নিবন্ধন দিতে বলে। এরপর ২০১৯ সালে সেই রায়ের বিরুদ্ধে কমিশন আপিল করে। তবে শেখ হাসিনার সরকার পতন হলে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন আপিল প্রত্যাহার করে। ফলে নিবন্ধন পেয়ে যায় দলটি।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের পরিবর্তন চান সাকি : গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন ও বিধিমালা নতুন রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে। তাই এই আইন ও বিধিমালা পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব শফিউল আজিমের হাত থেকে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন সনদ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা ‘মাথাল’ প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেছি। প্রতীক ইসির আইনের মধ্য থেকে বাছাই করতে হয়েছে। আমরা মনে করি, এই আইনগুলো পরিবর্তন করা দরকার। পুরো নিবন্ধন বিধিমালাই পরিবর্তন করা দরকার। কারণ, দল নিবন্ধনের যে আইন ও বিধি তৈরি করা হয়েছে, তা জনগণের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে, রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার অধিকার ক্ষুণ্ন করে। ফলে নিবন্ধন আইন পরিবর্তন করে সহজ করে তোলা এবং প্রতীক অবারিত করা যেন দল তার পছন্দসই প্রতীক বাছাই করতে পারে। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ৩১ ডিসেম্বর নিবন্ধনের জন্য আবেদন করি। সব শর্ত পূরণ করলেও ইসি থেকে বলা হয়, আমাদের গঠনতন্ত্রে অঙ্গ সংগঠন নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য নেই। অঙ্গ সংগঠন যে থাকতে পারবে না, তা গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করতে হবে। পরে আমরা দলের বর্ধিত সভা ডেকে গঠনতন্ত্রে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে ইসিতে জমা দিযেছি। কিন্তু ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আমাদের চিঠি দিয়ে জানানো হলো যে, আমাদের নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু কেন দেওয়া হচ্ছে না, তার কারণ চিঠিতে উল্লেখ করা ছিল না। আমরা আদালতে গেলে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল রায় পাই যে, গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে হবে এবং নিবন্ধন দেওয়া হয়নি, এটা অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রায়ের লিখিত কপি পাওয়ার ৩০ দিনের (৩০ জুন) মধ্যে ইসিকে নিবন্ধন দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু এরপর ছয় বছর কেটে গেলেও ইসি দেয়নি। জোনায়েদ সাকি বলেন, নিবন্ধন নেই, এই অজুহাতে নানাভাবে জেলায় জেলায় আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে। এভাবে তারা চাপে রেখেছিল। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশ মান্য করা হচ্ছে না, এই রকম দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনও আবার আদালতের দ্বারস্থ হয়। তবে আপিল চালাতে আগ্রহী কি না, সরকার পতনের পর এই ইসির কাছে জানতে চাইলে তারা আপিল প্রত্যাহার করে নেয়। এভাবে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।