
মূলত ত্বকের তেল গ্রন্থিগুলো ত্বককে তার সতেজতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই গ্রন্থিগুলো তার কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল হ্রাস পায়। এর কারণে ত্বক প্রাণহীন ও শুষ্ক দেখায়। আর এ কারণেই- ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে লোশন ব্যবহার করা উচিত। কেননা, লোশন ত্বককে সুস্থ রাখতে এবং আর্দ্রতা প্রদানে সাহায্য করে।
বডি লোশন-ময়েশ্চারাইজার
উভয় উপাদান ত্বকের পুষ্টি ও আর্দ্রতা বজায় রাখে। তবে লোশন ময়েশ্চারাইজারের তুলনায় হালকা হয়। এতে পানির পরিমাণ বেশি। বডি লোশন ত্বকের উপরিতলের ক্ষত নিরাময় করে এবং সানবার্ন প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে ময়েশ্চারাইজার ত্বকের ভিতরে ঢুকে প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য ময়েশ্চারাইজার সবচেয়ে ভালো। কিন্তু যখন ত্বককে দীর্ঘ সময়ের জন্য হাইড্রেটেড রাখা প্রয়োজন, তখন বডি লোশন সেরা বিকল্প।
মুখে মাখার ময়েশ্চারাইজার এবং বডি লোশনের ফর্মুলেশন ও টেক্সচার একেবারেই ভিন্ন। ময়েশ্চারাইজার ক্রিমে ত্বকের ধরনের উপযোগী নানা রকম অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস থাকে যা ত্বকের বিশেষ প্রয়োজনগুলো মেটায়। এটি ঘনত্বের দিক থেকে অনেক হালকা। অন্যদিকে বডি লোশনে তৈলাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বককে হাইড্রেটেড (আর্দ্র) রাখলেও মুখের ত্বকের জন্য খুব ভারি।
বডি লোশন মুখে মাখা যায়?
সাধারণত ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে হাতে-পায়ে বডি লোশন ব্যবহার করা হয়। অনেকে আবার একে ময়েশ্চারাইজারের মতো করে মুখে নেন। এই চর্চাটা একেবারেই অনুচিত। কারণ- মুখের ত্বক শরীরের বাকি অংশের ত্বকের চেয়ে আলাদা। অন্যান্য অংশের ত্বক অনেক পুরু এবং তাতে সহজে প্রতিক্রিয়া হয় না। অন্যদিকে মুখের ত্বক পাতলা এবং স্পর্শকাতর। তা ছাড়া মুখের ত্বক সূর্যালোক, দূষণের মতো ক্ষতিকর উপাদানের সংস্পর্শে বেশি থাকে। ফলে দরকার বিশেষ যত্ন; যা সাধারণ বডি লোশন জোগান দিতে পারে না।
তবে এই বিষয়ে ভিন্ন মতও পোষণ করেন ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনার ত্বক বিশেষজ্ঞ আইভি লি। তিনি বলেন, ‘সাধারণত, বডি লোশন মুখে ব্যবহার করা যায়। তবে মুখের ত্বকে কোনো বিশেষ সমস্যা যেমন- ব্রণ প্রবণতা, একজিমা থাকলে জ্বালাপোড়া, অ্যালার্জি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।’ ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে তিনি আরও বলেন, এর কারণ হলো ‘ফেইস লোশন’ বা ক্রিম দুটোই নন-কমেডোজেনিক। মানে হলো এতে লোমকূপ আবদ্ধ হয় না এবং মুখের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ার পরেও ব্রণ, জ্বলুনি বা ‘হাইপো-অ্যালার্জেনিক’ অর্থাৎ সাধারণ অ্যালার্জি দেখা দেয় না।’ মুখে ব্রণ, একজিমা, অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা ইত্যাদি না থাকলে বডি লোশন মুখেও ব্যবহার করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে ‘বডি লোশন’ মুখে মাখতে চাইলে এর ঘনত্বের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
লেখা : সাদিয়া সারা