
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য জনপদ পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা অশান্ত হয়ে উঠছে পাহাাড়ি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর অশুভ তৎপরতায়। পাহাড়ে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা প্রায়শ নিজেদের মধ্যেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। তিন পার্বত্য জেলার উন্নয়ন, শান্তিচুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন সবকিছু বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কার্যক্রমে। সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরামের সঙ্গে বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠার প্রচারণা চালাচ্ছে। রাষ্ট্রদ্রোহী এ প্রচারণা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার অপতৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তিন পার্বত্য জেলা থেকে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো বছরে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি করছে। সরকারের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর প্রতিবেশী দেশের পুলিশের হাতে বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের বড় পাঁচটি চালান ধরা পড়েছে। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ইউপিডিএফ মূল দলের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি ৪০ এমএম গ্রেনেড লঞ্চার, দুইটি এম-১৬ রাইফেল, তিনটি একে-৪৭ রাইফেল, ১০টি গ্রেনেডসহ অন্যান্য সরঞ্জাম । ২১ জানুয়ারি একই দলের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পাওয়া যায় একটি ৯ এমএম পিস্তল, তিন রাউন্ড অ্যামুনেশন। ২৩ জানুয়ারি ইউপিডিএফ মূল দলের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি একে-৪৭ রাইফেল, দুইটি ম্যাগাজিন, ৪৫ রাউন্ড অ্যামুনেশন। ১২ ফেব্রুয়ারি জেএসএস মূল দলের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পাওয়া যায় দুইটি একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল, পাঁচটি মার্কিন তৈরি এম-৪ কার্বাইনসহ বিপুলসংখ্যক গুলি। ২৩ মার্চ আরেক অভিযানে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পর্যটনের জন্য সোনালি এলাকা। সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর তৎপরতায় পর্যটকরা পার্বত্য তিন জেলা সফরে ভীতসন্ত্রস্ত। পাহাড়ি এলাকার উন্নয়নের গতিও ত্বরান্বিত করা যাচ্ছে না তাদের কারণে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের দমন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ মনোভাব দেখাতে হবে।