
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে লড়াইয়ের জন্য মনোনয়ন দিয়ে ২৩১ জনকে চিঠি দিলেও কৌশলগত কারণে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষের কাছে কৌশলে মার খেতে চায় না আওয়ামী লীগ। তাই একটু ধৈর্য ধরে দলীয় প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। যারা এখন সিইসি বদল চায়, তারা ভোটে যাবে কি-না, সন্দেহ আছে। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন । ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রার্থিতা বাছাইয়ের পর আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের তালিকা প্রকাশ করা হবে। জোট-মহাজোটের শরিক দলগুলোর জন্য ৬৫-৭০টি আসন রেখেছি। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত বোঝাপড়া করে আমরা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করব। কাদের বলেন, মনোনয়ন দেওয়া মানে চূড়ান্ত না, মনোনয়ন দেওয়ার পর মাঠে আবার জরিপ করা হবে। তারপর যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তাকে চূড়ান্ত প্রার্থী বলে ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, মনোনয়নের নামে পিঠা ভাগ করা যাবে না। এ সময় জোটের তালিকা প্রকাশ করতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। বেশ কিছু আসনে দুজনকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেখানে দুজন দিয়েছি, সেখানে মাঠ জরিপ করে, যাকে জনপ্রিয় মনে করব, তাকে প্রার্থী দেব। কাদের বলেন, অনেক সময় দেখা যায় দলের ও শরিকদের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশের আগেই গণমাধ্যমে তাদের নাম চলে এসেছে। এ অবস্থায় অবশ্যই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী তালিকা দেওয়ার পর তা গণমাধ্যমে প্রকাশের কথা বলেন তিনি। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার কথাও বলেন তিনি। এবারের নির্বাচনে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে, আওয়ামী লীগের এমন ঘোষণার বিষয়ে কাদের বলেন, ৪৫ জন নতুন মুখ দেওয়াই চমক বলে। বদিকে নিয়ে বিতর্ক থাকায় তাকে নমিনেশন দেইনি। তবে কি তিনি অপরাধী? না তিনি অপরাধী না। ৭টি জরিপে বদি এগিয়ে থাকলেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। রানা জেলে থাকায় তার বাবা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী সত্ত্বেও বিতর্ক এড়াতে তাকে নমিনেশন দেওয়া হয়নি। সিইসি পরিবর্তন করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের দাবির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের বাকি আর এক মাস। এই সময়ে যারা সিইসি বদল চায়, তারা ভোটে যাবে কি-না, সন্দেহ আছে। তবে আমরা একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগ থেকে যারা মনোনয়ন পাননি তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী বা ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন— এদের ব্যাপারে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে দু-একজন বেরিয়ে গেলে কিছু যায় আসে না। ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না, কাদের সিদ্দিকীর মতো নেতা যেখানে আমাদের দল ছেড়ে চলে গেছেন, সেখানে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ তো কিছুই না। এ ধরনের লোক চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমেনি, বরং বেড়েছে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। মনোনয়ন পাওয়ার পর অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের মতো এত বড় দলে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকতেই পারে। তবে জোটের কোনো প্রার্থীর যোগ্যতা বেশি থাকলে সেখানে ছাড় দেওয়া হবে। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের অন্য কারও বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড়ানোর সম্ভাবনার ব্যাপারে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদ্রোহ মানেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার। যতই জনপ্রিয় হোক দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে বহিষ্কার।