logo
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০
<font style=\'color:#000000\'>কেউ নেই খালেদার বাড়িতে, নিঃসঙ্গ ফিরোজা ভবন </font>
নিজস্ব প্রতিবেদক

কেউ নেই খালেদার বাড়িতে, নিঃসঙ্গ ফিরোজা ভবন

গুলশান এভিনিউতে খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’য় এখন সুনসান নীরবতা-বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ে ৭৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর ডুপ্লেক্স বাড়ি। নামফলকে কালো কালিতে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে ‘ফিরোজা’। এটি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন। সেনানিবাসের বাসা ছেড়ে আসার পর এই ভাড়াবাড়িতেই ওঠেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু টানা ৪৭ দিন ধরে ওই বাড়িতে নেই বেগম জিয়া। থাকছেন গুলশান কার্যালয়ে। ৩ জানুয়ারি রাতে গুলশান কার্যালয়ে এসে ‘অবরুদ্ধ’ হন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে ওই কার্যালয়েই আছেন বিএনপি প্রধান। এরপর থেকে তার বাসাবাড়িটিতে এখন সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। আগের মতো নেতা-কর্মী কিংবা আত্মীয়স্বজনের নেই আনাগোনা। বাসভবনের সামনে অবশ্য নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন ছয় পুলিশ। এর মধ্যে একজন এএসআই পদমর্যাদার কর্মকর্তা। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বাড়ির সামনে নিয়মিত ডিউটি পালন করছেন। রাতে অবশ্য দুজন সদস্য থাকেন। বাড়ির ভেতরে বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চার-পাঁচজন স্টাফ অবস্থান করছেন। খালেদা জিয়ার অবর্তমানে তারাই বাড়িটি দেখভাল করছেন।  বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠজনরা জানান, হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি শেষ হলেই নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন খালেদা জিয়া। তবে গুলশান কার্যালয়ে থেকেও বাসভবনের  খোঁজখবর রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তাছাড়া বেগম জিয়ার দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরাও মাঝেমধ্যে বাসভবনে যান। বাড়ির ভেতরের গাছপালার যত্নআত্তিসহ সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছেন তারা। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত স্টাফরাও সার্বক্ষণিক তদারকিতে ব্যস্ত থাকেন। তবে আগের মতো সেখানে আর বেগম জিয়ার নিকটাত্মীয় কিংবা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের আনাগোনা নেই।   
খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ে যাওয়ার পর তার বাসভবনের মূল ফটক বন্ধ রয়েছে। অবশ্য পরিবারের সদস্যরা সেখানে গেলে খুলে দেওয়া হয় ফটক। বাড়ির আঙিনায় আম, কাঁঠাল, নারকেলসহ অনেক গাছ আছে।  ভেতরের দোতলা সাদা ঝকঝকে বাড়িটির ছাদে বাঁশের মাচায় লাউয়ের ডগা শোভা পাচ্ছে। এছাড়া বাড়িটির বিভিন্ন স্থানে নানা রঙের ফুলের টবও সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। বাড়িতে অবস্থান করা এক কর্মচারী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তারা প্রতিদিনই প্রতীক্ষা করেন তাদের ম্যাডামের জন্য। তবে কবে তিনি এ বাড়িতে আসবেন, তা তারা জানেন না। বাড়িটি সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন করে রাখা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের পছন্দ অনুযায়ী সবকিছু সাজানো গোছানো হয়।
দায়িত্ব পালনরত একজন পুলিশ সদস্য জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনের সামনে দায়িত্ব পালন করছেন। তিন শিফটে ভাগ হয়ে ছয়জন পুলিশ সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। তবে এখন বাড়ির সামনে কোনো কোলাহল নেই বলে জানান তিনি। গতকাল সরেজমিনে ফিরোজা ভবন ঘুরে দেখা গেছে, একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ছয় পুলিশ সদস্য সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া একজন সিএসএফ (চেয়ারম্যানের সিকিউরিটি ফোর্স) সদস্যকেও সেখানে দেখা যায়। বাড়ির সঙ্গেই পুলিশ ও সিএসএফ সদস্যদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান এক পুলিশ। ফটকের বাইরে এই পুলিশ সদস্যদের বসার জায়গা।
খাওয়া, গোসল, ঘুমও বাড়ি ঘেঁষে একটি বাসায়। বাসভবনের সামনে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ছবি সংবলিত পোস্টার। বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে শোক জানিয়েও অনেকে বাড়ির আশপাশে পোস্টার ও ব্যানার টানিয়ে রেখেছেন। মূল ফটকের ভেতরে থাকা ইন্টারকম বেশ কয়েক দিন ধরে নষ্ট বলে একজন সিএসএফ সদস্য জানান।
তিনি আরও বলেন, অনুমতি ছাড়া ভেতরে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের লোকজনের ক্ষেত্রে অনুমতির প্রয়োজন নেই।