logo
আপডেট : ২০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০
গোপন ভোটে হবেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক

গোপন ভোটে হবেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট

আজ নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার কথা ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার। পার্লামেন্ট সদস্যদের গোপন ভোটে নির্বাচিত হবেন শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনী দৌড়ে শুরু থেকে আলোচনায় থাকায় প্রধান বিরোধী দল এসজেবির নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন- ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির নেতা ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে (৭৩), বামপন্থি ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের নেতা অনুড়া কুমারা দাসানায়েক (৫৩) ও ক্ষমতাসীন শ্রীলঙ্কা পোডুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) দলের সিনিয়র আইনপ্রণেতা ডালাস আলাহাপ্পেরুমা (৬৩)।

গতকাল পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য তিনজনের নাম মনোনীত করা হয়। এসএলপিপি নেতা দীনেশ গুনাবর্দেনা মনোনীত করেন রনিল বিক্রমাসিংহেকে, সাংসদ বিজিথা হেরাথ মনোনীত করেন অনুড়া কুমারা দেশনায়েককে এবং বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা ডালেস আলাহাপ্পেরুমাকে মনোনীত করেন। সংসদের মহাসচিব ধামিকা দাসানায়েক রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন। নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য আজ সংসদ বৈঠকে বসবে। গতকাল ছিল প্রেসিডেন্ট পদে পার্লামেন্টে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন। এদিন প্রেসিডেন্ট পদের লড়াই থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার  করে এসএলপিপির ডালাস আলাহাপ্পেরুমাকে সমর্থন দেন বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। যদিও শুরু থেকেই লড়াইয়ের মাঠে এগিয়ে ছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনীত প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য গতকাল পার্লামেন্ট অধিবেশন বসে। সেখানেই প্রেমাদাসা তার সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর আগে তিনি টুইটারে লেখেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করছি। আমাদের জোট এবং আমাদের বিরোধী অংশীদাররা ডালেসকে বিজয়ী করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করবে’।

সাজিথের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও সমর্থনের কারণে অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত হলেও ক্ষমতাসীন এসএলপিপির ডালাস আলাহাপ্পেরুমা সব হিসাব-নিকাশ উল্টে দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গেছে, এরই মধ্যে তিনি তার দলের সহকর্মীদের একটি অংশের মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেও এই পদের জন্য লড়ছেন। গত মে মাসে ষষ্ঠবারের মতো শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। বর্তমান পার্লামেন্টে রনিল বিক্রমাসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির একটি মাত্র আসন থাকলেও ক্ষমতাসীন দল এসএলপিপির একটি অংশ এবং গোতাবায়ার ভাই বাসিল রাজাপক্ষের সমর্থন রয়েছে তার প্রতি। তবে গোতাবায়া পরিবারের সঙ্গে সখ্যতার কারণে এই রাজনীতিবিদ শ্রীলঙ্কার বিক্ষুব্ধ জনতার কাছে অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এসব জেনে অবশ্য সাবধানে পা ফেলছেন রনিল। গত সোমবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শ্রীলঙ্কার ভয়াবহ আর্থিক সংকটের তথ্য আগের সরকার গোপন করছিল। শ্রীলঙ্কা ‘দেউলিয়া’ এবং ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হওয়া প্রয়োজন’ এ সত্যটা গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকার বলেনি। তবে আমাদের ৫-১০ বছরের প্রয়োজন নেই। আগামী বছরের শেষ নাগাদ পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে শুরু করবে। এর আগে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে গত সোমবার থেকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে। অর্থনৈতিক সংকটের জেরে বিক্ষোভের মুখে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট প্যালেস থেকে তিনি পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। পরে গোপনে দেশত্যাগ করেন।