সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যে ছাড় কেউ দেয় না

মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

যে ছাড় কেউ দেয় না

চারদিকে চলছে ছাড়ের মহোৎসব। কে কার চেয়ে বেশি ছাড়ে পোশাকসহ অন্য মালামাল বিক্রি করবে তার অলিখিত প্রতিযোগিতা। আসুন দেখে নিই কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড়টা খুব জরুরি হলেও আমরা কিছুতেই ছাড় পাব না। লিখেছেন - মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

 

মশারি টাঙানো : ব্যাচেলর স্বামী সারা জীবন মশারি টাঙিয়ে এসেছে আর ভেবেছে বিয়ের পরেই বুঝি এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে। কিন্তু দেখা গেল বিয়ের আগে যে সিঙ্গেল মশারি টাঙাত এখন তাকে ডাবল মশারি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ পারতে হচ্ছে। স্ত্রী যদি মশারি টাঙানোর ওপর ২৫ পারসেন্টও ছাড় দেন তাহলে স্বামী-সমাজে খুশির জোয়ার বয়ে যাবে। গোপনে গোপনে মিষ্টি বিতরণ করতেও দেখা যাবে অনেক স্বামীকে।

 

বাস ভাড়া : জনৈক ফেসবুক কবি বলেছেন, ‘সমুদ্রের জল কমিয়া মরুভ‚মি হইতে পারে, আকাশের নীল মিলিয়া ধূসর হইতে পারে এমনকি জগতের সব কিছু কমিয়া যাইতে পারে কিন্তু বাস ভাড়া কমিবে না।’ সুতরাং বুঝতেই পারছেন, বাস ভাড়ায় যদি শপিং মলের স্টাইলে ডিসকাউন্ট বা ছাড় দেওয়া হয় তাহলে দেশের মানু কোন পর্যায়ে আনন্দ পাবে? পোশাক-আশাকের সঙ্গে বাস ভাড়ায়ও ছাড় দেওয়া হোক।

 

সেলফি আপলোড : এক সময় আমরা পরিবারসহ ফেসবুকে বসতাম। আমরা ফেসবুক চালাতাম আর বাবা-মা, ভাই-বোন ঘাড়ের ওপর দিয়ে তাকিয়ে থাকত মনিটরে। এখন সে পরিবেশ একটুও নেই। এর অন্যতম কারণ সেলফি আপলোড। সুন্দরীদের সেলফি ঝড়ের কবলে পড়ে হোম পেজ ওপেন করলে শুধু তাদের নাক মুখ ব্যাকানো সেলফিই চোখে পড়ে। কোনো ছেলের হোম পেজে একের পর এক মেয়েদের সেলফি এলে অথবা কোনো মেয়ের হোম পেজে একের পর এক রোমিওদের সেলফি এলে বাবা-মায়ের মনে হতেই পারে তার সন্তান বুঝি বখে গেছে। এ অবস্থায় সেলফি আপলোডাররা যদি বিশে ছাড় দেন, মানে মাসের প্রথম ১৫ তারিখ পর্যন্ত ৭০ পারসেন্ট সেলফি আপলোড করা হবে না। এই বিশে ছাড়ে ভদ্রসমাজ বেশ উপকৃত হয়।

 

টিভি বিজ্ঞাপন : মানু এখন আর অনুষ্ঠান নয়, বিজ্ঞাপন দেখতেই টিভি চালু করে। বিজ্ঞাপনের ফাঁকে অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে এভাবেই তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। এ অবস্থায় যদি হঠাৎ করে বিজ্ঞাপন প্রচারে বিশে ছাড় দেওয়া হয় দর্শক মারাÍক সারপ্রাইজড হবে। দর্শককে চমকিত আনন্দ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন প্রচারে ছাড় দেওয়া যেতে পারে।

 

কোচিং ফি-তে ছাড় (গোপনে) : ধরুন কোচিং প্রতিষ্ঠানগুলো কোচিং ফির ওপর ফিফটি পারসেন্ট গোপনে ছাড় দিল। গোপনে বলছি কারণ, এই ছাড়ের কথা অভিভাবক জানবেন না। প্রতিষ্ঠান ছাড়া টাকা ক্যাশ ব্যাক করল সরাসরি ছাত্রের হাতে। ওই ছাত্রের উৎসব লেগে যাবে না? শুধু ওই ছাত্রের না, উৎসব লেগে যাবে ছাত্রের বন্ধুদেরও।

 

টকশোতে ঝগড়াঝাটিতে ছাড় : ব্যস্ততম দিন পার করে রাতে একটু আয়েশে টিভি দেখবেন সেই সুযোগ নেই। সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত চলেছে বিদেশি সিরিয়ালে ঝগড়া, মাঝ রাত থেকে শুরু হয় টকশোতে ঝগড়া। আপামর জনসাধারণের কথা বিবেচনায় টকশোতে ঝগড়াঝাটিতে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। আমাদের কান সুরক্ষিত থাকবে। টকশোতে শতভাগ ছাড় দেওয়া চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর