আগে বল চাকরিটা কী, তারপর চিন্তা করে দেখছি করা ঠিক হবে কি হবে না। ছোটভাই বলল, স্বামীধরা। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম, বলিস কী এসব! আমি ‘ছেলেধরা’র কথা শুনেছি! স্বামীধরার কথা তো শুনিনি! তাও এটা নাকি একটা চাকরি। একটু ভেঙে বল তো!
আমার এক ভাবী ফোন করলেন। আমি ফোন ধরেই জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছেন? ভাবী আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়েই বললেন, শপিংমলের ভিতরে কি ঠেলাগাড়ি ঢুকতে দেয়? আমি তার আজব প্রশ্ন শুনে বিস্ময় প্রকাশ করলাম, ঠেলাগাড়ি ঢুকতে দেবে মানে? শপিংমলের ভিতরে ঠেলাগাড়ি কেন ঢুকতে দেবে? ভাবী বললেন, আসলে হয়েছে কী, আমার শপিংয়ের স্টাইল দেখলেই তো তোমার ভাইয়ের প্রেশার উঠে যায়, তাই আমি চাচ্ছিলাম তার প্রেশার যাতে না ওঠে। মাথা যাতে গরম না হয়। এজন্য সঙ্গে ছোট একটা ফ্যান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শপিংয়ের লিস্ট আরও লম্বা হয়েছে। আর এই লিস্ট দেখে তোমার ভাই অতিপ্রেশারের কারণে বারবার মূর্ছা যাওয়ার সুযোগ খুঁজছে। কিন্তু তাকে তো শপিংমলে না নিয়ে গেলেও চলছে না। যেহেতু আমি শপিংয়ের সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও সরছি না। যে কারণে ঠিক করেছি, এখন শুধু ফ্যান না, সঙ্গে ছোট একটা এসি নিয়ে ঘুরব। আমি বললাম, ও আচ্ছা, তাহলে ঠেলাগাড়ি খুঁজছেন এসি রাখার জন্য? ভাবী বললেন, জি না, এসিটা হাতেই থাকবে। তোমার ভাই যেদিকে মুভ করবে, এসিও সেদিকে ঘোরাবো। ঠেলাগাড়িটা লাগবে মূলত জেনারেটর বহনের জন্য। এসি তো আর পেনসিল ব্যাটারি দিয়ে চলবে না, তাই না? আমার এক ছোটভাই বলল, একটা ভালো চাকরি পেয়েছি। কিন্তু চাকরিটা করা ঠিক হবে কিনা, বুঝতে পারছি না। আমি বললাম, আগে বল চাকরিটা কী, তারপর চিন্তা করে দেখছি করা ঠিক হবে কি হবে না। ছোটভাই বলল, স্বামীধরা। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম, বলিস কী এসব! আমি ‘ছেলেধরা’র কথা শুনেছি! স্বামীধরার কথা তো শুনিনি! তাও এটা নাকি একটা চাকরি। একটু ভেঙে বল তো! ছোটভাই ভেঙে বলল, আসলে হয়েছে কী ভাই, এই শপিংয়ের মৌসুমে অনেকে ভাবীই তাদের স্বামীদের নিয়ে পেরেশানিতে আছেন। কারণ, এমনিতে স্বামীরা তাদের সঙ্গে থাকলেই, যেই দেখছে হাজার হাজার টাকা বিল হয়েছে, অমনি তারা কেটে পড়তে চাইছে। কিন্তু ভাবীরা তা হতে দেবেন কেন? তাই তারা আমার মতো সুঠাম দেহের একজনকে নিয়োগ দিতে চাইছে। যাতে বিলের অ্যামাউন্ট দেখে স্বামীরা কেটে পড়তে চাইলেই আমি খপ করে ধরে ফেলতে পারি। চাকরিটা কেমন ভাই? আমি বললাম, চাকরি তো ভালোই। তবে বেচারা স্বামীদের কথা মাথায় রেখে একটা সৎ কাজ অন্তত করিস। ছোটভাই গভীর আগ্রহের সহিত জানতে চাইল সৎ কাজটা কী। আমি বললাম, সৎ কাজটা হচ্ছে, যখন কেটে পড়ার চেষ্টারত স্বামীদের ধরতে যাবি, তখন হাতে একটা সরিষার তেল মাখিয়ে নিস। এতে হবে কী, স্বামীরা চেষ্টা করলে পিছলে পালিয়ে যেতে পারবে। আসলে অধিকারের এই যুগে ‘স্বামী অধিকার’ এর বিষয়টা ভুলে গেলে একদমই চলবে না কিন্তু।